কুরআন অধ্যয়নে কার্যকরী দুই পরামর্শ



যখন আপনি কুরআন তিলাওয়াত করেন, আপনি কি আপনার এবং আল্লাহর মাঝে কোন সম্পর্ক অনুভব করেন? আপনি কি আপনার উপর কুরআনের আয়াতের প্রভাবকে অনুভব করতে পারেন? বাস্তব জীবনে কি কুরআনের বিধান প্রয়োগ করতে পারেন?

কুরআনে উল্লেখিত শব্দগুলো সাধারণ শব্দ থেকে অধিক গুরুত্বপূর্ণ। কেননা এই শব্দ গুলো আল্লাহর পক্ষ থেকে নাযিলকৃত। প্রকৃতপক্ষে আমরা যখন কুরআন তিলাওয়াত করি, আমরা আল্লাহর সঙ্গে কথা বলি। এই শব্দগুলোর মাধ্যমে আল্লাহ আমাদের জানান দুনিয়ায় জীবন যাপনের বিধান সম্পর্কে, আখেরাতের জান্নাত-জাহান্নাম সম্পর্কে, অতীত কালের নবী রাসূল এবং তাদের সংগ্রামময় জীবন সম্পর্কে।

পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, “আমি কুরআনকে উপদেশ গ্রহণের জন্য সহজ করে দিয়েছি, অতএব, আছে কি কোন উপদেশ গ্রহণকারী?” (সূরা আল-ক্বামার : ২২)

এই আয়াত থেকে আমরা জানতে পারি কুরআন অধ্যয়নের অন্যতম উদ্দেশ্য কুরআন থেকে উপদেশ গ্রহণ করা, নিজের জীবনে বাস্তবায়ন করা। তাই, আমরা কি করে উদ্দেশ্য-সফলভাবে কুরআন পাঠ করবো, এর দুটি কার্যকরী পদ্ধতি নিম্নে প্রদত্ত হল-

একসাহাবারা কুরআনের কিছু অংশ প্রথমে পড়তেন এবং আত্মস্থ করতেন। পরে তা নিজেদের বাস্তব জীবনে প্রয়োগের পর পরের অংশ পাঠ করতে যেতেন। সাহাবাদের মত আমরা এভাবে কুরআন অধ্যয়ন করতে পারি। এই অনুশীলন আমাদেরকে কুরআনের সঙ্গে সম্পর্ক সৃষ্টি করতে এবং প্রাত্যহিক জীবনে কুরআন অনুযায়ী জীবন যাপন করতে সাহায্য করবে ইনশাআল্লাহ।

দুইকুরআন অধ্যয়ন এবং বাস্তবায়নের অপর পদ্ধতিটি হতে পারে, কুরআনের প্রতিটি আয়াত বা কিছু আয়াত পাঠের পর পরই আপনি আল্লাহর কাছে দুআ করতে পারেন। এটি আপনার সঙ্গে কুরআনের বন্ধনকে দৃঢ় করবে। যেমন, সূরা বাকারার দ্বিতীয় আয়াত পাঠ করার পর আপনি আয়াতটির বক্তব্য অনুযায়ী আল্লাহর কাছ থেকে হেদায়েত পাওয়ার জন্য দুআ করতে পারেন। পরবর্তীতে তৃতীয় আয়াতে বর্ণিত মুমিনদের গুণাবলী অর্জনে আল্লাহর সাহায্য চেয়ে আয়াতটি পাঠের পর আল্লাহর কাছে দুআ করতে পারেন।

কখনো কখনো কোন আয়াতের অর্থ হয়তো পুরোপুরি বুঝতে পারবেন না। কিন্তু কিছু কিছু শব্দ যথা জান্নাত, জাহান্নাম, শয়তান ইত্যাদি বিভিন্ন শব্দের উল্লেখ করতে গিয়ে হয়তো আপনি বুঝতে পারবেন। তখন আপনি জান্নাত লাভের জন্য, জাহান্নাম থেকে মুক্তির জন্য, শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চেয়ে দুআ করতে পারেন।

আপনি যদি এভাবে দুআ করে করে কুরআন পড়েন, তবে আপনি যথাযথভাবেই আল্লাহর সঙ্গে কথোপকথনে শরীক হবেন এবং আপনার ও আল্লাহর মাঝে একটি বিশেষ যোগযোগ সৃষ্টি হবে।

মহান আল্লাহ আমাদের থেকে কুরআন অধ্যয়নের এ প্রচেষ্টা কবুল করুন। আমীন।

Post a Comment

Please Select Embedded Mode To Show The Comment System.*

Previous Post Next Post