অনেকে মনে করেন, ‘কিরাত’ মানে সুর করে
পড়া, আর দ্রুত পড়লে তেমন কোনো নিয়ম পালন
করতে হয় না; আসলে এ ধারণাটি সঠিক নয়। মূলত
কোরআন তিনভাবে পড়া যায়Ñ ১. হদর, তাদবির ও
তারতিল। ‘হদর’ হলো দ্রুত পড়া (যেমন হাফেজরা
তারাবি নামাজে পড়েন), ‘তাদবির’ হলো মধ্যম
পড়া (যেমন আলেমরা সাধারণ ফরজ নামাজে
পড়েন) আর ‘তারতিল’ হলো ধীরে পড়া (যেমন
কারিরা পড়ে থাকেন)। হদর পড়ার সময় মাদ্দে
ফারয়ি ও গুন্নাহগুলো কসর বা কমানো যায়।
কিন্তু সব অবস্থায় আরবি ব্যাকরণের তিনটি
‘ফরজ’ সূত্র অবশ্যপালনীয়। তা হলোÑ ক.
হারফগুলো সঠিকভাবে উচ্চারণ করা, খ. হারকাত
তাড়াতাড়ি পড়া, গ. মাদ হলে টেনে পড়া।
কোনো অবস্থাতেই এর ব্যতিক্রম করার সুযোগ
নেই। কারণ বিধান হলো, ‘নামাজের বাইরে
কোরআন তেলাওয়াত করা ‘নফল’ (ঐচ্ছিক বা
অতিরিক্ত ইবাদত) আর বিশুদ্ধ উচ্চারণে
কোরআন তেলাওয়াত করা ‘ফরজ’ (অবশ্যকরণীয়
অলঙ্ঘনীয় কর্তব্য); সুতরাং নফলের জন্য ফরজ-
ওয়াজিব তরক করা জায়েজ (বৈধ) হবে
না।’ (ফাতাওয়ায়ে শামি)।
বর্তমানে অনেক জায়গায় তারাবি নামাজে
অতিদ্রুত অস্পষ্ট আওয়াজে পড়ার যে প্রচলন
হয়েছে, তাও সঠিক নয়। এটি ‘হদর’ এর আওতায়ও
পড়ে না। ‘তারতিল’ শব্দটি দুইটি অর্থে ব্যবহৃত হয়।
প্রথমত, ‘তারতিল’ মানে শুদ্ধ পাঠ (যখন শব্দটি
স্বতন্ত্রভাবে ব্যবহার হয়); এ অর্থে সব ধরনের
শুদ্ধ পাঠই তারতিল (এ তারতিল ফরজ)। দ্বিতীয়ত,
তারতিল শব্দটি যদি ‘হদর’ ও ‘তাদবির’ এর
পাশাপাশি ব্যবহার হয়, তখন এর অর্থ হবে ধীরে
পড়া বা সুন্দর করে পড়া (এ তারতিল নফল)।
Tags
ধর্ম ও জীবন