একটি আট বছরের শিশু—যার জীবন কেবলই রঙিন স্বপ্নে ভরপুর হওয়ার কথা, যে বয়সে তার নিরাপদ আশ্রয় হওয়া উচিত বাবা-মায়ের কোলে, সেই ছোট্ট শিশুটির ওপর নেমে এলো এক অমানবিক দুঃস্বপ্ন। মাগুরায় সংঘটিত এই নৃশংস ঘটনা আমাদের সমাজের বিবেককে আবারও প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
কিন্তু এই প্রশ্নের জবাব কে দেবে? আমরা কি শুধু শোক প্রকাশ করব, নাকি এই ভয়ংকর বাস্তবতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামব?
আমাদের চারপাশ কি আসলেই নিরাপদ?
প্রতিদিনই খবরের শিরোনাম হয় শিশুদের ওপর পাশবিক নির্যাতনের ঘটনা। প্রতিটি ঘটনার পর আমরা শোকাহত হই, সামাজিক মাধ্যমে প্রতিবাদ জানাই, কিন্তু এরপর? আমরা ভুলে যাই, নতুন খবরের সঙ্গে মানিয়ে নিই, আর অপরাধীরা থেকে যায় ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। এভাবে আর কতদিন?
এই প্রশ্ন আজ আমাদের সবার সামনে—আমাদের সমাজ কি সত্যিই শিশুদের জন্য নিরাপদ? যদি তাই হবে, তবে কেন এমন ঘটনা বারবার ঘটে? কেন আমাদের সন্তানদের রাস্তায়, বাড়ির আঙিনায়, এমনকি পরিচিত মানুষের কাছেও নিরাপদ রাখা কঠিন হয়ে উঠছে?
বিচারহীনতা কি অপরাধীদের সাহস দিচ্ছে?
এই ধরনের ঘৃণ্য অপরাধ বারবার ঘটছে, কারণ অপরাধীরা বিশ্বাস করে, তারা পার পেয়ে যাবে। বিচারব্যবস্থার দীর্ঘসূত্রিতা, সমাজের উদাসীনতা আর কিছুক্ষণের শোকের পর সব ভুলে যাওয়ার প্রবণতা তাদের আরও বেপরোয়া করে তুলছে।
কিন্তু এই শিশু আর পাঁচটা সাধারণ ঘটনা নয়। এই শিশুটির কান্না আমাদের সমাজের ব্যর্থতার প্রতিচিত্র। যদি আমরা এখনই প্রতিরোধ না গড়ে তুলি, তবে এ ধরনের ঘটনা চলতেই থাকবে।
এখনই সময় জেগে ওঠার!
আমরা আর কেবল সহানুভূতি দেখিয়ে চুপ থাকতে পারি না। আমাদের সোচ্চার হতে হবে, কঠোর দাবি তুলতে হবে—
অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এমন অন্যায় করার সাহস না পায়।
শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কঠোর আইন প্রয়োগ ও দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
প্রতিটি পরিবার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিশুদের আত্মরক্ষা ও সচেতনতার শিক্ষা দিতে হবে।
সামাজিকভাবে একসঙ্গে দাঁড়িয়ে বলতে হবে—আর না!
এই শিশুটির আর্তনাদ শুধু তার পরিবারের কান্না নয়, এটি আমাদের সবার লজ্জা, আমাদের সমাজের ব্যর্থতার এক নির্মম দলিল। যদি আজ আমরা নীরব থাকি, তবে কাল আরও কোনো শিশুর জীবন এভাবে অন্ধকারে ডুবে যাবে।
তাই বলছি—
আমরা নীরব নই! আমরা প্রতিবাদী! আমরা বিচারের দাবিতে একসঙ্গে গর্জে উঠব!
আর কোনো শিশু যেন এমন নির্মমতার শিকার না হয়—এটাই হোক আমাদের প্রতিজ্ঞা!
Tags
অপরাধ ও দুর্নীতি