‘আত্মীয়স্বজনকে তাদের পাওনা আদায় করে দেবে, অভাবগ্রস্ত এবং মুসাফিরদেরও।’ (সূরা বনি ইসরাইল : ২৬)। যেসব মানুষ আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখবে না এবং আত্মীয়স্বজনের হক আদায়ের ব্যাপারে গাফেল থাকবে, ওইসব ব্যক্তির সঙ্গে আল্লাহর রাসুল (সা.) কোনো সম্পর্ক রাখবেন না।
আত্মীয়তা ভ্রাতৃত্ব বন্ধনের সেতু। আত্মীয়তার মাধ্যমে পারস্পরিক সম্পর্ক সুদৃঢ় হয়। আত্মীয়স্বজনের হক আদায় করা কোনো করুণার বিষয় নয়। আত্মীয়স্বজনের খোঁজখবর নেয়া, যোগাযোগ রক্ষা করা, মেহমানদারিতা অবশ্যই পালনীয় কর্তব্য। কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘আত্মীয়স্বজনকে তাদের পাওনা আদায় করে দেবে, অভাবগ্রস্ত এবং মুসাফিরদেরও।’ (সূরা বনি ইসরাইল : ২৬)। যেসব মানুষ আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখবে না এবং আত্মীয়স্বজনের হক আদায়ের ব্যাপারে গাফেল থাকবে, ওইসব ব্যক্তির সঙ্গে আল্লাহর রাসুল (সা.) কোনো সম্পর্ক রাখবেন না। আর যে ব্যক্তির সঙ্গে আল্লাহর রাসুল (সা.) এর সম্পর্ক থাকবে না তিনি কখনও জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবেন না। সুতরাং আত্মীয়স্বজনের হক আদায়ের জন্য সব সময় চেষ্টা করতে হবে। হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল (সা.) এরশাদ করেছেন, ‘আত্মীয়তার সম্পর্ক রহমানের মূল। সুতরাং যে তার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখবে, আমিও তার সঙ্গে সুম্পর্ক রাখব। আর যে তার থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করবে, আমিও তার থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করব।’ (বোখারি : ৫৫৯৩)।
ইসলাম একে অপরের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করে দেয়।
এছাড়া মোমিন সালেহিন সত্যবাদীরা পরস্পর পরস্পরের ভাই-বেরাদর। পরস্পরের খোঁজখবর আনানেয়ার মাধ্যমে এ সম্পর্ক আরও মজবুত হয়। কোনো কারণে যদি আত্মীয়স্বজনের মধ্যে বিবাদ দেখা দেয় কিংবা সম্পর্কের মধ্যে অবনতি ঘটে। তাহলে অপর মোমিন ভাইয়ের কর্তব্য হলো ইনসাফের সঙ্গে ফয়সালা করে দেয়া।
উভয় পরিবার কিংবা উভয়ের সম্পর্ক যেন অটুট থাকে এর চেষ্টা করা। কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘মোমিনরা তো (একে অপরের) ভাই-বেরাদর, অতত্রব তোমাদের ভাইদের মাঝে মীমাংসা করে দাও, আল্লাহপাককে ভয় করো আশা করা যায় তোমাদের ওপর দয়া ও অনুগ্রহ করা হবে।’ (সূরা হুজরাত : ১০)।
‘হে আমার সম্প্রদায়! আমার সঙ্গে বিরোধ যেন কিছুতেই তোমাদের এমন অপরাধ না করায় যাতে তোমাদের ওপর তার অনুরূপ বিপদ আপতিত হবে যা আপতিত হয়েছিল নূহের সম্প্রদায়ের ওপর; আর হুদের সম্প্রদায়ের ওপর, সালিহের সম্প্রদায়ের ওপর, আর লুতের সম্প্রদায় তো তোমাদের থেকে দূরে নয়।’ (সূরা হুদ : ৮৯)।
আত্মীয়স্বজনকে সাধ্য অনুযায়ী আদর-আপ্যায়ন করতে হবে। কারণ মেহমানদারিতার মধ্যে আত্মীয়স্বজনের হক রয়েছে। কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘এরা শুধু আল্লাহর ভালোবাসায় মিসকিন, এতিম ও কয়েদিদের খাবার দেয়। (এর বলে) আমরা শুধু আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টির জন্যই তোমাদের খাবার দিচ্ছি, আমরা তোমাদের কাছ থেকে কোনোরকম প্রতিদান চাই না।’ (সূরা দাহর : ৮, ৯)। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, হজরত রাসুল (সা.) এরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং পরকালের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন তার প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়। যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং পরকালে বিশ্বাস রাখে, সে যেন মেহমানকে সম্মান করে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং শেষ দিবসে ঈমান রাখে, সে যেন ভালো কথা বলে অথবা চুপ থাকে।’ (বোখারি : ৫৫৯৩)।