‘উম্মাহাতুল মুমিনীন’ একটি আরবী বাক্য। এর
অর্থ হলো, ‘মুমিনদের জননীগণ’। এখানে
মুমিনদের মা বা জননী বলতে ঐ সব
নারীদেরকে বুঝানো হয়েছে, যাঁদেরকে
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর
জীবদ্দশায় স্ত্রী হিসাবে গ্রহণ
করেছিলেন। অন্য কথায়, রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে যে সব মহিয়সী
নারীর বিয়ে হয়েছিল তাঁরাই হলেন উম্মাহাতুল
মুমিনীন।
উল্লেখ্য, ‘মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ’ নামী
যে শ্রেষ্ঠ মহামানব আমাদের রাসূল (যিনি
সর্বশেষ নবী ও রাসূলও) যিনি কুরআনে
কারীমের প্রথম ধারক-বাহক, বিশ্লেষক,
বাস্তবায়ক, আমরা তাঁর উম্মত (অনুসারী)। তাঁর
সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক রুহানী (আত্মিক)
পিতার। আর যারা তাঁর সম্মানীত স্ত্রী তাঁরা
আমাদের শ্রদ্ধেয়া (রুহানী) জননী। সে
অর্থেই ব্যবহৃত হয় ‘উম্মাহাতুল মুমিনীন’। এ
প্রসঙ্গে কুরআনে কারীমে ইরশাদ
হয়েছে, নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম তাঁর উম্মতের কাছে তাদের
জীবনের চেয়েও অধিক প্রিয়পাত্র। আর তাঁর
শ্রদ্ধাস্পদ স্ত্রীগণ মুমিন উম্মতগণের মা। [সূরা
আহযাব : ৬]
একথা সর্বজনবিদিত যে, সর্বশ্রেষ্ঠ নবী
হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
মানুষের মুক্তির জন্য আদর্শ মানবরূপে
এসেছিলেন এ ধূলির ধরায়। মানবীয় সকল
গুণের আধার ও আকর ছিলেন তিনি। একদিকে
আল্লাহ-প্রেম যেমন তাঁর হৃদয়ে ছিলো সর্বদা
জাগ্রত, যেমন ছিলেন তিনি আখেরাতের প্রতি
উম্মুখ, তেমনি এ নশ্বর বিশ্ব এবং
বিশ্ববাসীকেও তিনি করে নিয়েছিলেন একান্ত
আপন। বিশ্ব সংসারের সকল সৃষ্টি ছিল তাঁর পরিবার।
এতদ্ব্যতীত ১২ জন পুণ্যবতী নারীর প্রিয়
স্বামী ছিলেন তিনি।
মহান রাব্বুল আলামীনের প্রত্যক্ষ এবং
পরোক্ষ নির্দেশেই মহানবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর যৌবনকাল থেকে বৃদ্ধকাল
পর্যন্ত ১২ জন নারীকে গ্রহণ করেছিলেন
স্ত্রীরূপে। সবচেয়ে তাৎপর্যের ব্যাপার
হলো, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর
কোনও কোনও বিবাহের কাজী ছিলেন স্বয়ং
আল্লাহ তাআলা। [সূরা আহযাব : ৩৭]
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কম বয়সে
বেশি বয়সের নারীদের বিবাহ করা, ১১/১২
নারীকে একই সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে রাখা,
(রাসূলের নিন্দুকেরা যা ভালো চোখে
দেখেন না) ছিলো রাসূলের বিশেষ বৈশিষ্ট্য।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন দ্বীনে ইসলামের
বিশেষ স্বার্থে এই বিধান তাঁর জন্য বিশেষভাবে
প্রদান করেছেন। ইসলামকে যারা উপলব্ধি
করতে পারে না, তারাই কেবল এনিয়ে প্রশ্ন
তুলতে চায়।
নবী পত্নীদের বিশেষ মর্যাদা চিরঅক্ষুণ্ন
রাখার উদ্দেশ্যেই মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম-এর মৃত্যুর পরও তাঁদেরকে বিবাহ করা
সকল উম্মতের জন্য হারাম করে দিলেন
আল্লাহ তাআলা। মহান আল্লাহ তাআলা নবী
পত্নীদের অধিষ্ঠিত করলেন আগত-অনাগত
সকল উম্মতের মাতৃত্বের মহান আসনে।
উম্মাহাতুল মুমিনীন অর্থাৎ বিশ্ব উম্মতের
কল্যাণময়ী জননী রূপে বরিত হলেন তাঁরা।
সুতরাং নবীর মৃত্যুর পরও তাঁরা আর কারো
স্ত্রী হতে পারেন না।
মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখার
সৌভাগ্য হয়নি আমাদের। কিন্তু উম্মাহাতুল মুমিনীন
তাঁকে দেখেছেন একান্ত কাছ থেকে
দীর্ঘকাল পর্যন্ত। উম্মাহাতুল মুমিনীনের
দৃষ্টিতে কেমন ছিলেন তিনি, কীভাবে
কেটেছে তাদের জীবন মহানবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে―এ ক্ষুদ্র
পরিসরে সেদিকেই দৃষ্টি মেলে ধরতে চাই
আমরা। উম্মুল মুমিনীন হযরত খাদিজা বিনতে
খুয়াইলিদ রা. ছিলেন হযরতের প্রথম
জীবনসঙ্গিনী। যৌবনের শেষ প্রান্তে
এসে ২৫ বৎসরের যুবক মহানবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামকে পতিরূপে পেয়ে ধন্য
হয়েছিলেন তিনি। হযরত খাদিজা রা.-এর মৃত্যুর পর
থেকে মহানবীর বৃদ্ধকাল পর্যন্ত আরো
যে সকল বিদুষী মহিয়সী নারী নবীজীর
পত্নীত্বলাভে সৌভাগ্যবান হয়েছিলেন, তাঁরা
হলেন যথাক্রমে : ২. হযরত সাওদা রা., ৩. হযরত
আয়েশা রা., ৪. হযরত হাফসা রা., ৫. হযরত যয়নাব
বিনতে খুযাইমা রা., ৬. হযরত যয়নাব বিনতে জাহাশ
রা., ৭. হযরত উম্মে হাবীবা রা., ৮. হযরত উম্মে
সালমা রা., ৯. হযরত মায়মুনা রা., ১০. হযরত সুফিয়া রা.,
১১. হযরত জুয়াইরিয়া রা.।
আল-আমিনরূপে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম-এর সুখ্যাতি সমগ্র আরবে ছড়িয়ে
পড়ার পর থেকেই হযরত খাদীজা রা. রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে চিনতে
পেরেছিলেন। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম-এর আমানতদারি, সততা, নিষ্ঠা, উন্নত
চরিত্র হযরত খাদিজা রা.-এর হৃদয়ে সৃষ্টি করেছিল
এক অভাবিত আন্দোলন। তাই সকল বাধা বিপত্তি
উপেক্ষা করে স্বামী হিসাবে বরণ
করেছিলেন তিনি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামকে।
মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নবুয়ত
প্রাপ্তির পরতো বটেই নবুয়তপ্রাপ্তির পূর্বেও
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন হযরত
খাদিজার চোখে একজন বুদ্ধিমান, সরল, সৎ ও
নির্ভিক ব্যক্তিত্ব। তাইতো ২৫ বৎসরের সহায়
সম্বলহীন মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামকে বিবাহ করার পর যখন একদল
ঈর্ষাকাতর, লোভী লোক হযরত খাদীজা রা.-
কে ভর্ৎসনা করতে লাগলো, তখন তিনি
তাদেরকে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন, আপনারা
কেবল ধন ঐশ্বর্যকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন,
জ্ঞানবুদ্ধি, সরলতা, সততা এবং সর্বোচ্চ চারিত্রিক
বৈশিষ্ট্যাবলিকে তুচ্ছ করছেন। আমি এমন একজন
ব্যক্তিকে স্বামী হিসাবে গ্রহণ করেছি, যিনি
গভীর জ্ঞানের অধিকারী। যার মাঝে
রয়েছে সততা, সরলতা, নিষ্ঠা। সর্বোপরি উন্নত
চরিত্রের অধিকারী তিনি, নাইবা থাকুক তাঁর বিত্ত-
বৈভব। আপনারা সাক্ষী থাকুন, আমি স্বেচ্ছায়,
সুস্থমস্তিষ্কে কারো প্ররোচনা ব্যতীতই
আমার স্থাবর অস্থাবর সকল সম্পত্তি তথা আমার
সর্বস্ব পরম স্বামী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামকে দান করলাম।
হযরত খাদীজা রা.-এর বদ্ধমুল বিশ্বাসে
আজীবন মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
ছিলেন একজন মুক্তিকামী, মঙ্গল-
আকাক্সক্ষী, মিষ্টভাষী, অনাথের আশ্রয়দাতা,
অতিথিপরায়ণ ও সত্যভাষী ব্যক্তিত্ব। মহানবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নবুয়ত
প্রাপ্তিকে তিনিই সর্বপ্রথম স্বীকার করে
নেন নির্দ্বিধায়।
প্রথম ওহী নাযিলের ঘটনায় ভীত সন্ত্রস্ত
মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে
দ্বিধাহীন চিত্তে হযরত খাদীজা রা. জানিয়ে
দেন, প্রিয়তম স্বামী, আপনি শান্ত হউন, আল্লাহ
তাআলা আপনার কোন অনিষ্ট করতে পারেন না।
কেননা, আপনি কারো প্রতি অন্যায় অবিচার
করেন না, কারো সঙ্গে অসৌজন্যমূলক ব্যবহার
করেন না, বরং গরীব দুঃখীদের সর্বদা সাহায্য
করেন, বিপন্নকে আশ্রয় দান করেন,
আত্মীয়তার বন্ধন অক্ষুণ্ন রাখেন, সত্যভাষণ
পছন্দ করেন, গরীব ধনী-সকলকে এক
দৃষ্টিতে দেখেন, সুতরাং আপনার ক্ষতির কোন
আশঙ্কা করবেন না। [সহীহ বুখারী, হাদীস ৩]
অন্য বর্ণনায় প্রকাশ, একদা জিব্রাঈল আ.-কে
দেখে একটু ভীত হয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম খাদীজা রা.-কে ডেকে
বললেন, ঐ যে উনি আসছেন! রাসূলের একথা
শুনে হযরত খাদীজা রা. মহানবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রথমে স্বীয় উরুতে
এবং পরে কোলে বসিয়ে জিজ্ঞেস
করলেন। এখনও কি তাঁকে দেখছেন?
মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জবাবে
বললেন, হ্যাঁ, দেখতে পাচ্ছি। খাদীজা রা. এবার
মুখের আবরণ খুলে ফেলে জিজ্ঞেস
করলেন, এখনও কি তাঁকে দেখতে পাচ্ছেন?
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, না,
এখন আর দেখতে পাচ্ছি না। মহানবীর এ জবাব
শুনে হযরত খাদীজা রা. বললেন, আপনি নিশ্চিত
থাকুন, উনি আল্লাহর প্রেরিত ফেরেশতা ছাড়া
কেউ নন। বিদুষী ও ধনাঢ্য রমণী হযরত
খাদীজা রা. ছিলেন মহানবীর অনন্য
প্রেমাস্পদ। হযরত খাদীজা রা. মহানবীর শান্তির
জন্য বিলিয়ে দিয়েছিলেন নিজের সর্বস্ব।
মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এতটুকুন
অস্বস্তি ভোগ করুন, কোন প্রকার যাতনার
শিকার হোন, তা তিনি বরদাস্ত করতে পারতেন না।
রাসূলের জন্য অবর্ণনীয় এ ত্যাগের বিনিময়ে
হযরত খাদীজা রা.-কে তিনি দিয়েছিলেন
অকৃত্রিম ভালবাসা। হযরত খাদীজা রা. হয়েছেন
প্রথমা উম্মত জননী। উল্লেখ্য, হযরত
খাদীজাতুল কুবরা রা.-এর সঙ্গে, রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বিবাহ হয়েছিল এমন এক
সময়ে যখন তাঁর বয়স পঁচিশ বছর আর হযরত
খাদীজার বয়স চল্লিশ বছর। ইতিপূর্বে হযরত
খাদীজা রা. আরো দুই স্বামীর ঘর করে বিধবা
হয়েছিলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-
এর সঙ্গে হযরত খাদীজার বিবাহ সংঘটিত হওয়ার
সময় রাসূলের পক্ষে অভিভাবক হিসেবে
উপস্থিত ছিলেন প্রিয়চাচা আবূ তালেব। যিনি শেষ
পর্যন্ত ঈমান গ্রহণ না করলেও আজীবনই
ছিলেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর
পরম হিতাকাক্সক্ষী এবং দায়িত্বশীল মুরুব্বী।
প্রথমা উম্মুল মুমিনীন হযরত খাদীজা রা.-এর
গর্ভেই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর
ছয় সন্তান (৪ মেয়ে ২ ছেলে) জন্ম গ্রহণ
করে। তাঁরা হলেন যথাক্রমে, ১. হযরত কাসিম
(এই ছেলের নামানুসারেই রাসূল সা.-এর উপনাম
ছিল আবুল কাসিম), ২. হযরত জয়নাব রা., ৩. হযরত
রুকাইয়্যা রা., ৪. হযরত উম্মে কুলসুম রা., ৫.
খাতুনে জান্নাত হযরত ফাতিমা রা., ৬. হযরত
আবদুল্লাহ রা.। উল্লিখিত দুই ছেলে অল্প
বয়সেই ইন্তেকাল করেন। হযরত খাদীজা রা.-
এর সঙ্গে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর
মধুময় দাম্পত্য জীবন ছিল প্রায় ২৫ বছরব্যাপী।
নবুয়্যাতের দশম বছরের রমজান মাসের ১০
তারিখে হযরত খাদীজা রা. ইন্তেকাল করেন,
তখন তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর। মক্কা
শরীফের জান্নাতুল মুয়াল্লায় তিনি চিরনিদ্রায় শায়িত
আছেন।
হযরত খাদীজা রা.-এর ইন্তেকালের পর রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুবই নিঃসঙ্গ হয়ে
পড়েন। কেননা, জীবন সঙ্গিনী হওয়ার
সঙ্গে সঙ্গে হযরত খাদীজা রা. মক্কী
জীবনে রাসূলের জন্য একজন অভিভাবক
হিসেবেও অবদান রেখেছেন।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও হযরত
খাদীজার জীবদ্দশায় অন্য কোনো
নারীকে বিবাহ করেননি। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম-এর অন্যতম পৃষ্ঠপোষক আবূ
তালেবের মৃত্যু এবং এরপর হযরত খাদীজার
মৃত্যুতে মনঃকষ্টের মাঝেই দিনাতিপাত করছিলেন
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। এমন
পরিস্থিতিতে হযরত সাওদা বিনতে যামআ রা.-কে
তাঁর খালা খাওলা বিনতে হাকীম রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে বিবাহ দেয়ার
প্রস্তাব করেন। রাসূল সা. এ প্রস্তাবে সম্মতি
দিলে এবং হযরত সাওদা ও তার পিতা এ বিয়েতে
রাজি হলে হযরত খাওলার ব্যবস্থাপনায় এ বিবাহকার্য
সম্পাদিত হয়। এসময়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম-এর বয়স ৫০ পার হচ্ছে, আর হযরত
সাওদার বয়স ৫০-৫৫ এর মধ্যে।
উল্লেখ্য, হিজরতের প্রায় তিন বছর পূর্বে
হযরত সাওদা রা. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-
এর সঙ্গে বৈবাহিক বন্ধনে আবদ্ধ হন। রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ইন্তেকাল
পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১২ বছর তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দ্বিতীয় স্ত্রী
হিসেবে জীবন কাটান। প্রথম হিজরির রবিউল
আউয়াল মাস পর্যন্ত এককভাবে তিনি রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পারিবারিক
জীবনের পরিচালিকা ছিলেন।
হযরত খাদীজা বিনতে খুয়াইলিদের মতো হযরত
সাওদাও ছিলেন বিধবা। তদুপরি পূর্ব স্বামীর মৃত্যুর
পর তিনি ছিলেন অসহায়া। অন্যদিকে হযরত সাওদা
ছিলেন বয়স্কা এবং শারীরিক গঠনের দিক দিয়ে
ভারী ও মোটা। ইসলাম গ্রহণ করায় হযরত সাওদার
পরিবারের অনেকেই তাঁকে সমালোচনার পাত্র
বানিয়ে ছিল। কিন্তু সেসবের দিকে ভ্রুক্ষেপ
না করে হযরত সাওদা রা. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম-এর শোকাহত জীবনকে আনন্দময়
করতে নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছিলেন। হযরত
খাদীজা রা.-এর রেখে যাওয়া অপ্রাপ্ত বয়স্ক
পুত্র সন্তান ও মেয়েদের তিনিই ছিলেন
পরবর্তী মা। তিনি ফর্সা বর্ণের অধিকারী ও
উপস্থিত বুদ্ধিসম্পন্না ছিলেন। হযরত সাওদা রা.
বলেন, আমার প্রথম স্বামী শাকরানের মৃত্যুর
কয়েকদিন আগে আমি স্বপ্নে দেখি রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার কাঁধে পা
রেখে শুয়ে আছেন। স্বামীকে এ
স্বপ্নের কথা জানালে তিনি বলেন, তুমি বড়
ভাগ্যবতী। আমি মারা যাবো আর তুমি রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রী
হবে―এই স্বপ্ন সেদিকেই ইশারা করছে।
হযরত সাওদা রা. হযরত আয়েশা উম্মুল মুমিনীন
হওয়ার আগ পর্যন্ত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামকে সার্বক্ষণিক সঙ্গ দিতেন। হুজুর
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহনশীল ও
প্রীতিসুলভ আচরণের কথা উল্লেখ করে
হযরত সাওদা বলেছেন, আমি রাতের বেলা রাসূল
সা.-এর সঙ্গে নফল নামাযে শরীক হতাম, তিনি
লম্বা লম্বা রুকু সেজদা করতেন, ভারী
শরীরের কারণে আমার বেশ কষ্ট হত।
একদিন নামাজ শেষে আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ!
আপনি নামাযে অনেক লম্বা রুকু করেন।
গতরাতে আপনার সঙ্গে নামাজ পড়ার সময় মনে
হচ্ছিলো আমার নাক ফেটে রক্ত বের হবে।
তাই আমি কিছু সময় হাত দিয়ে নাক টিপে ধরে
রেখেছিলাম। আমার এ ধরনের কথায় রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাগ করেননি। বরং তিনি
নীরবে শুধু মুচকি হেসেছেন এবং
বলেছেন, কষ্ট হলে তুমি আমার সঙ্গে নামাজ
পড়া থেকে বিরত থাকবে। কুরআন শরীফে
তার অনুমতি দিয়েছেন আল্লাহ রাব্বুল আলামীন।
হযরত সাওদা রা. ছিলেন বেশ উদার মনা। হযরত
আয়েশা রা. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর
স্ত্রী হয়ে আসার পর তিনি তার রাত্রিকালীন
স্ত্রীত্বের অধিকার হযরত আয়েশার জন্য
স্বেচ্ছায় ছেড়ে দিয়েছিলেন। তিনি সাগ্রহে
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে
বলেছিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আয়েশা
তরুণী বয়সের। আমি বৃদ্ধের পর্যায়ে পৌঁছে
গেছি। সুতরাং রাত্রিকালীন আপনার সান্নিধ্যের
যে অংশ আমার জন্য বরাদ্দ আছে তা আমি আমার
ছোট বোন হযরত আয়েশাকে দিয়ে দিলাম।
উল্লেখ্য, আল্লাহ তাআলা রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামকে স্ত্রীদের রাত্রিকালীন
সান্নিধ্যের ব্যাপারে স্বাধীনতা দিয়েছিলেন।
তিনি তাঁর স্ত্রীদের যে কাউকে ইচ্ছেমত
সান্নিধ্য প্রদানের অথবা না-প্রদানের অধিকার
রাখতেন। কিন্তু রাসূল সে অধিকার প্রয়োগ
করতেন না। সবাইকে নির্ধারিত সান্নিধ্য প্রদান
করতেন। অবশ্য হযরত সাওদার উদারতা
প্রদর্শনের জন্য তার প্রতি তিনি খুশি হন।
উল্লেখ্য, হযরত সাওদা রা.-এর উদারতা হযরত
আয়েশা রা. পেয়েছিলেন বিভিন্নভাবে।
হিজরী তৃতীয় অথবা চতুর্থ সনে রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর একমাত্র কুমারী
স্ত্রী হিসেবে রাসূলের ঘরে এলে হযরত
সাওদা তাকে সাদরে গ্রহণ করেন। হযরত সাওদা
ছিলেন হযরত আয়েশার পরিচালিকা এবং প্রবীণ
সহপত্নী।
হযরত সাওদার পর কিশোরী হযরত আয়েশা রা.-
এর বিয়ে হয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামের সঙ্গে মহান রাব্বুল আলামীনের
নির্দেশে। সময়টা ছিল হিজরী প্রথম বর্ষ।
হযরত আয়েশার বয়স তখন ছয় অথবা সাত। এর দুই
তিন বৎসর পর তিনি রাসূলের সান্নিধ্যে আসেন।
খাদীজা রা.-এর মৃত্যুর চার-পাঁচ বছর পর থেকে
মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মৃত্যু
পর্যন্ত তিনি ছিলেন তাঁর সার্বক্ষণিক সঙ্গিনী।
হযরত আয়েশা রা.-এর দৃষ্টিতে মহানবী যেমন
ছিলেন কুরআনের প্রতিচ্ছবি, তেমনি সর্বোচ্চ
ও সর্বশ্রেষ্ঠ প্রেমিক।
জনৈক সাহাবী মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম-এর সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানতে
চাইলে হযরত আয়েশা রা. উত্তরে বলেন,
আরে, তোমরা কি কুরআন পড়নি? তিনি তো
ছিলেন কুরআনেরই বাস্তব নিদর্শন।
এক হৃদয়ের অপরহৃদয়ের প্রতি থাকে পরম
আকর্ষণ। নারীহৃদয় পুরুষ হৃদয়ের একান্ত
কাছাকাছি হয়ে হতে পারে তৃপ্ত―এ অনুভূতি লাভ
করেছিলেন হযরত আয়েশা রা. মহানবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সান্নিধ্যে এসে
সর্ব প্রথম। অপরদিকে হযরত আয়েশা রা.
আজীবন তাঁর হৃদয়ের সবটুকু প্রেম সঁপে
দিয়েছিলেন কেবল তাঁরই জন্য।
মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উদার
ভালবাসা হযরত আয়েশা রা.-এর হৃদয় খরিদ করে
নিয়েছিল। তাই অনুক্ষণ মহানবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রেমদীপ আপন হৃদয়ে
জ্বালিয়ে রাখতেন হযরত আয়েশা রা.। তিনি
আনন্দ চিত্তে কবিতা আবৃত্তি করতেন, মহানবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আকাশের
সূর্যের চেয়ে উত্তম সূর্য রূপে আখ্যা
দিয়ে তিনি নিজের রচিত কবিতা আবৃত্তি করতেন
এভাবে : নিলাকাশের সূর্যের চেয়ে / আমার
হৃদয় আকাশে জ্বলে উঠা সূর্য / কতইনা
দেদীপ্যমান! / নীলাকাশের সূর্য
উদীয়মান / ফজরের প্রস্থানে / অথচ আমার
সূর্য (মহানবী) / রজনী প্রহরেও থাকে
দীপ্তিমান।
উম্মাহাতুল মুমিনীনের চোখে মহানবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেমন ছিলেন পরম
শ্রদ্ধার পাত্র পতিধন, তেমনি ছিলেন তাদের
বন্ধু, গল্প ও খেলার সাথী। এ প্রসঙ্গে হযরত
আয়েশা রা. বর্ণনা করেন, আমি অনেক সময়
রাসূলের সঙ্গে দৌড়ের প্রতিযোগিতা করতাম।
বৃদ্ধ বয়সে তাঁর শরীর ভারী হয়ে যাওয়ার
কারণে তিনি দ্রুত দৌড়াতে পারতেন না। ফলে
আমি তখন তাঁকে প্রায়ই হারিয়ে দিতাম, অবশ্য
কোনও কোনও সময়ে তিনিও আমাকে
হারিয়ে দিয়ে প্রতিশোধ গ্রহণ করতেন। হযরত
আয়েশা তাঁর অন্য বর্ণনায় উল্লেখ করেন,
একদা মসজিদে নববীর চত্বরে হাবশী
কিশোররা খেলা করছিল আর রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাঁধে ভর করে আড়ালে
থেকে আমি সে খেলা দেখছিলাম। আয়েশা
রা. আরো বলেন, আমার ছেলে বয়সে রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনসার বালিকাদের
আমার সঙ্গে খেলা করতে পাঠিয়ে দিতেন।
গল্পের সাথী হয়ে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম হযরত আয়েশাকে শোনাতেন
সুন্দর ও মজার মজার কিচ্ছা-কাহিনী। অন্যদিকে
কখনো কখনো হযরত আয়েশা রা. রাসূল সা.-
এর সঙ্গে সঙ্গত কারণে অভিমানও করতেন।
হযরত আয়েশা রা. বর্ণনা করেন, একদা গভীর
রাতে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে
কাছে না পেয়ে ভাবলাম আমাকে পরিত্যাগ
করে তিনি হয়তো অন্য কোন স্ত্রীর ঘরে
গমন করে থাকবেন। তারপরও অন্ধকার ঘরের
মাঝে খুঁজতে থাকলাম। পরিশেষে ঘরের এক
কোণে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামকে নামাজরত অবস্থায় আবিষ্কার করলাম।
মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে খুঁজে
পেয়ে আমি ভীষণ লজ্জা পেলাম এই
ভেবে যে, মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম কোন ঊর্দ্ধজগতে বিচরণ করছেন
আর আমি তাঁর সম্পর্কে কী ধারণা করছি!
উম্মাহাতুল মুমিনীনের সঙ্গে মহানবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন অত্যন্ত
সদালাপী এবং মিষ্টভাষী। উম্মাহাতুল মুমিনীন
শরীয়তের অনেক বিষয়েও নির্ভয়ে নিজস্ব
যুক্তি পেশ করতেন মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামের সম্মুখে। আর তিনি মিষ্টি ভাষায় সে
বিষয়ে বুঝিয়ে বলতেন। এ প্রসঙ্গে
উল্লেখযোগ্য, একদা অন্ধ সাহাবী হযরত
ইবনে উম্মে মাকতুম, হযরত উম্মে সালমা ও
হযরত মায়মুনার উপস্থিতিতে রাসূলের কাছে
আসলে তাঁদেরকে পর্দা করতে বললেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে তারা বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ!
উম্মে মাকতুম তো অন্ধ, আমাদের দেখতে
পাচ্ছে না। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
তখন তাদেরকে শান্ত স্বরে বুঝিয়ে বললেন,
উম্মে মাকতুম যদিও তোমাদেরকে দেখতে
পাচ্ছে না কিন্তু তোমরাতো তাকে দেখতে
পাচ্ছ, তোমরা তাকে কেন দেখবে?
উম্মাহাতুল মুমিনীনের কাছে রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন জীবনের
সবচেয়ে বড় পাওয়া। আল্লাহর হুকুমের পরে
তাঁর চেয়ে বড় তাদের দৃষ্টিতে আর কিছু ছিল
না। মক্কা বিজয়ের পূর্বে উম্মুল মুমিনীন হযরত
উম্মে হাবীবার পিতা আবু সুফিয়ান একদা রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বিছানায় বসতে
উদ্যত হলে উম্মে হাবীবা রা. বিছানা গুটিয়ে
রাখেন এবং তাঁর বাবাকে বলেন, আপনি মুশরিক,
সুতরাং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পবিত্র
বিছানায় বসার উপযুক্ত আপনি নন!
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটু অসুস্থ
হয়ে পড়লেই হযরত সাফিয়্যা রা. বলতেন, হায়!
আফসোস, অসুখটা যদি রাসূলের না হয়ে আমার
হত!
কোন এক যুদ্ধ সফরে হযরত আয়েশা এবং
হযরত হাফসা রা. উভয়েই রাসূলের সঙ্গীনী
ছিলেন। প্রতিরাতেই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম হযরত আয়েশার হাওদায় গমন করতেন।
সফরে এ অধিকার রাসূলের ছিল। একদা হাফসা রা.
রাসূলকে কাছে পাওয়ার উদ্দেশ্যে হযরত
আয়েশার সঙ্গে আপন হাওদা পরিবর্তন
করলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
আয়েশার হাওদায় হযরত হাফসাকে দেখেও
সেদিন সেই হাওদায়ই অবস্থান করলেন। পরদিন
হযরত আয়েশা রা. রাসূলের এক রাতের বিরহ-
বেদনা প্রকাশ করলে হযরত হাফসা রা. বললেন,
এখন অনুভব করতে পারো, প্রতিদিন তাঁকে না
পেয়ে আমি কি যন্ত্রণা ভোগ করেছি!
চতুর্থ/পঞ্চম হিজরিতে প্রচুর গনিমতের মাল
লাভের পর হযরত আয়েশা রা. ও হযরত হাফসা রা.
উম্মাহাতুল মুমিনীনের জন্য খোরপোষ
বাড়িয়ে দেয়ার আবেদন করেন। কিন্তু রাসূল সা-
এর কাছে এই আবেদন গৃহীত হয় নি; বরং তিনি
তাদের প্রতি ক্ষুব্ধ হন। অবশেষে তাঁরা ক্ষমা
প্রার্থনা করে রাসূলকে সন্তুষ্ট করেন। [সূরা
আহযাব, মাআরিফুল কুরআন, ৭ম খ-]
মোদ্দা কথা, মান-অভিমান, ভালবাসা, শ্রদ্ধা-ভক্তি
ইত্যাদির মাঝে রাসূলের সান্নিধ্যে কেটেছে
দীর্ঘকাল উম্মুল মুমিনীনদের জীবন।
মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে
পতিরূপে পেয়ে তারা হয়েছেন পরম
সৌভাগ্যের অধিকারিণী। আমাদের জন্য তারা
রেখে গেছেন সর্বক্ষেত্রে মঙ্গল ও
কল্যাণময় আদর্শ। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের মধ্যে সে
ব্যক্তি উত্তম যে তাঁর স্ত্রীর দৃষ্টিতে
উত্তম। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং
উম্মাহাতুল মুমিনীনের মাঝে রচিত আদর্শের
বাস্তবায়ন ঘটালে স্বামী থেকে স্ত্রী এবং
স্ত্রী থেকে স্বামী বিমুখতার এই যুগেও
গড়ে উঠবে ঘরে ঘরে সুখী সংসার। আজ শুধু
প্রয়োজন সে চেতনা সে আদর্শ
বাস্তবায়নের কাক্সিক্ষত প্রতিযোগিতা। মহানবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বামী-স্ত্রীর
যেরূপ মর্যাদা ও ন্যায্য অধিকার বর্ণনা
করেছেন, তার বাইরে আরো অধিক অধিকার
খুঁজতে গেলে অশান্তিই ডেকে আনা হবে।
তথ্য সূত্র:
১। কুরআনুল কারীম।
২। মাআরিফুল কুরআন।
৩। সহীহ বুখারী শরীফ
৪। রাসূল সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর
স্ত্রীগণ যেমন ছিলেন।
৫। সীরাতে মুস্তফা।
উম্মাহাতুল মুমিনীনের দৃষ্টিতে রাসূল সাল্লাল্লাহু অালাইহি ওয়া সাল্লাম
byMd Mokbular Rahman
-
0