মানুষ হত্যা করা গুরুতর অপরাধ

প্রবন্ধটি পড়া হলে, শেয়ার করতে ভুলবেন না
 রহমান রহীম আল্লাহ্ তায়ালার নামে- 
 অশান্তির আগুনে ঘেরা পৃথিবী। দ্বন্দ্ব-সংঘাতে ভরা অবনী। এ পৃথিবীতে এখন মানবজীবনের চেয়ে সস্তা কিছু নেই। বিশেষত বাংলাদেশের মতো তৃতীয়বিশ্বের দেশগুলোয় মাত্র ১০ টাকার জন্যও মানুষ খুন হচ্ছে। মিডিয়ায় কান পাতলে কিংবা সংবাদপত্রের পাতায় চোখ রাখলেই নিহতের স্বজনের আহাজারী আর মাতমের দৃশ্য থাকবেই। সন্তানের হাতে জন্মদাতা কিংবা জন্মদাতার হাতে সন্তান, স্বামীর হাতে স্ত্রী কিংবা স্ত্রীর হাতে স্বামী, শিক্ষকের হাতে ছাত্র কিংবা ছাত্রের হাতে শিক্ষক, কর্মচারীর হাতে মালিক কিংবা মালিকের হাতে কর্মচারী, নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে সাধারণ নাগরিক কিংবা নাগরিকের হাতে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য খুন- কোনোটাই যেন এখন আর অস্বাভাবিক নয়! এদিকে কথিত উন্নত ও সভ্য দেশগুলো মোড়লিপনা দেখাতে গিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আগ্রাসন চালিয়ে খুন করছে হাজার হাজার নিরপরাধ মানুষকে। যারা মুসলিম দেশগুলোকে মানবাধিকারের সবক দেয়, তারাই আবার মজলুম মুসলিম দেশগুলোয় প্রতিদিন নিষ্পাপ শিশু ও অসহায় নারী ও বৃদ্ধদের ওপর বোমা নিক্ষেপ করছে। পৃথিবীর মানচিত্রজুড়েই এখন মুসলিমের তপ্ত খুনের ছোপছোপ দাগ। অতি সম্প্রতি বাংলাদেশে যোগ হয়েছে গুম নামের এক আতঙ্ক। সুস্থ-সবল মানুষকে চোখের সামনে পরিবার থেকে উঠিয়ে নিচ্ছে আর সে লোকটি ঘরে ফিরছে লাশ হয়ে। কখনো এ লাশটিও আর ফেরত পাচ্ছে না হতভাগা পরিবার। কে নিচ্ছে, কোথায় নিচ্ছে, কারা নিচ্ছে- কোনোটারই যেন হদিস নেই। পৃথিবীর তাবৎ মানুষের মতো বাংলাদেশের নাগরিকরাও এ হত্যা-নৈরাজ্য থেকে পরিত্রাণ খুঁজে ফিরছে। মুক্তির অন্বেষায় তারাও যত্রতত্র ধর্ণা দিচ্ছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। লাশের মিছিল কেবল দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতরই হচ্ছে। এমতাবস্থায় আর সব সমস্যার মতো এর সমাধানেও ইসলামই হতে পারে হতাশায় আলোকদিশা। উপায়হীনের অব্যর্থ উপায়। সেটি হলো, আমাদেরকে অবশ্যই ইসলামের শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে।তুলে ধরতে হবে ইসলামের অমলধবল আলোকশিখা। পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহের অমূল্য বাণীগুলো মানব হত্যাকে হারাম ঘোষণা করেছে।অন্যায়ভাবে অপরের প্রাণ হরণকেতালিকাভুক্ত করা হয়েছে বড় গুনাহসমূহের। শুধু তাই নয় পৃথিবীতে যত রকমের গুনাহের কাজ রয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে বড় মহান আল্লাহর সঙ্গে কাউকে অংশীদার বা শরীক সাব্যস্ত করা। এরপর সবচেয়ে বড় গুনাহ অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করা। হন্তারকের জন্য মহান আল্লাহ দুনিয়ায় বড় শাস্তি এবং আখেরাতে তীব্র আযাবের ঘোষণা দিয়েছেন। যেমন : আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ﴿ ۞ ﻗُﻞۡ ﺗَﻌَﺎﻟَﻮۡﺍْ ﺃَﺗۡﻞُ ﻣَﺎ ﺣَﺮَّﻡَ ﺭَﺑُّﻜُﻢۡ ﻋَﻠَﻴۡﻜُﻢۡۖ ﺃَﻟَّﺎ ﺗُﺸۡﺮِﻛُﻮﺍْ ﺑِﻪِۦ ﺷَﻴۡٔٗﺎۖ ﻭَﺑِﭑﻟۡﻮَٰﻟِﺪَﻳۡﻦِ ﺇِﺣۡﺴَٰﻨٗﺎۖ ﻭَﻟَﺎ ﺗَﻘۡﺘُﻠُﻮٓﺍْ ﺃَﻭۡﻟَٰﺪَﻛُﻢ ﻣِّﻦۡ ﺇِﻣۡﻠَٰﻖٖ ﻧَّﺤۡﻦُ ﻧَﺮۡﺯُﻗُﻜُﻢۡ ﻭَﺇِﻳَّﺎﻫُﻢۡۖ ﻭَﻟَﺎ ﺗَﻘۡﺮَﺑُﻮﺍْ ﭐﻟۡﻔَﻮَٰﺣِﺶَ ﻣَﺎ ﻇَﻬَﺮَ ﻣِﻨۡﻬَﺎ ﻭَﻣَﺎ ﺑَﻄَﻦَۖ ﻭَﻟَﺎ ﺗَﻘۡﺘُﻠُﻮﺍْ ﭐﻟﻨَّﻔۡﺲَ ﭐﻟَّﺘِﻲ ﺣَﺮَّﻡَ ﭐﻟﻠَّﻪُ ﺇِﻟَّﺎ ﺑِﭑﻟۡﺤَﻖِّۚ ﺫَٰﻟِﻜُﻢۡ ﻭَﺻَّﻯٰﻜُﻢ ﺑِﻪِۦ ﻟَﻌَﻠَّﻜُﻢۡ ﺗَﻌۡﻘِﻠُﻮﻥَ ١٥١ ﴾ ‏[ ﺍﻻﻧﻌﺎﻡ : ١٥١ ] ‘বল, “এসো, তোমাদের ওপর তোমাদের রব যা হারাম করেছেন, তা তিলাওয়াত করি যে, তোমরা তার সাথে কোন কিছুকে শরীক করবে না এবং মা-বাবার প্রতি ইহসান করবে আর দারিদ্র্যের কারণে তোমাদের সন্তানদেরকে হত্যা করবে না। আমিই তোমাদেরকে রিয্ক দেই এবং তাদেরকেও। আর অশ্লীল কাজের নিকটবর্তী হবে না- তা থেকে যা প্রকাশ পায় এবং যা গোপন থাকে। আর বৈধ কারণ ছাড়া তোমরা সেই প্রাণকে হত্যা করো না, আল্লাহ যা হারাম করেছেন। এগুলো আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে তোমরা বুঝতে পার।”’ {সূরা আল-আন‘আম, আয়াত : ১৫১} তাফসীরকার বাগবী (রহ.) বলেন, এ আয়াতে আল্লাহ যে কোনো মুমিন ও মুসলিম রাষ্ট্রে ট্যাক্স প্রদানকারী অমুসলিম নাগরিককে অন্যায়ভাবে হত্যা হারাম ঘোষণা করেছেন। হত্যার ন্যায়সঙ্গত কারণের মধ্যে রয়েছে ইরতিদাদ তথা কোনো মুসলিমের ইসলাম ধর্মত্যাগ, কিসাস তথা হত্যার বদলে হত্যা এবং রজম তথা বিবাহিত ব্যক্তির জেনা-ব্যভিচারের দণ্ড। [মা‘আলিমুত তানযীল : ৩/২০৩] আরেক আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ﴿ ﻭَﭐﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻟَﺎ ﻳَﺪۡﻋُﻮﻥَ ﻣَﻊَ ﭐﻟﻠَّﻪِ ﺇِﻟَٰﻬًﺎ ﺀَﺍﺧَﺮَ ﻭَﻟَﺎ ﻳَﻘۡﺘُﻠُﻮﻥَ ﭐﻟﻨَّﻔۡﺲَ ﭐﻟَّﺘِﻲ ﺣَﺮَّﻡَ ﭐﻟﻠَّﻪُ ﺇِﻟَّﺎ ﺑِﭑﻟۡﺤَﻖِّ ﻭَﻟَﺎ ﻳَﺰۡﻧُﻮﻥَۚ ﻭَﻣَﻦ ﻳَﻔۡﻌَﻞۡ ﺫَٰﻟِﻚَ ﻳَﻠۡﻖَ ﺃَﺛَﺎﻣٗﺎ ٦٨ ﻳُﻀَٰﻌَﻒۡ ﻟَﻪُ ﭐﻟۡﻌَﺬَﺍﺏُ ﻳَﻮۡﻡَ ﭐﻟۡﻘِﻴَٰﻤَﺔِ ﻭَﻳَﺨۡﻠُﺪۡ ﻓِﻴﻪِۦ ﻣُﻬَﺎﻧًﺎ ٦٩ ﴾ ‏[ ﺍﻟﻔﺮﻗﺎﻥ : ٦٧، ٦٨ ] ‘আর যারা আল্লাহর সাথে অন্য ইলাহকে ডাকে না এবং যারা আল্লাহ যে নাফ্সকে হত্যা করা নিষেধ করেছেন যথার্থ কারণ ছাড়া তাকে হত্যা করে না। আর যারা ব্যভিচার করে না। আর যে তা করবে সে আযাবপ্রাপ্ত হবে। কিয়ামতের দিন তার আযাব বর্ধিত করা হবে এবং সেখানে সে অপমানিত অবস্থায় স্থায়ী হবে।’ [সূরা আল-ফুরকান, আয়াত : ৬৮-৬৯] কাউকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হলে ইসলাম তার প্রতিকারের কার্যকর ব্যবস্থা নির্দেশ করেছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ﴿ ﻭَﻟَﺎ ﺗَﻘۡﺘُﻠُﻮﺍْ ﭐﻟﻨَّﻔۡﺲَ ﭐﻟَّﺘِﻲ ﺣَﺮَّﻡَ ﭐﻟﻠَّﻪُ ﺇِﻟَّﺎ ﺑِﭑﻟۡﺤَﻖِّۗ ﻭَﻣَﻦ ﻗُﺘِﻞَ ﻣَﻈۡﻠُﻮﻣٗﺎ ﻓَﻘَﺪۡ ﺟَﻌَﻠۡﻨَﺎ ﻟِﻮَﻟِﻴِّﻪِۦ ﺳُﻠۡﻄَٰﻨٗﺎ ﻓَﻠَﺎ ﻳُﺴۡﺮِﻑ ﻓِّﻲ ﭐﻟۡﻘَﺘۡﻞِۖ ﺇِﻧَّﻪُۥ ﻛَﺎﻥَ ﻣَﻨﺼُﻮﺭٗﺍ ٣٣ ﴾ ‏[ ﺍﻻﺳﺮﺍﺀ : ٣٣ ] ‘আর তোমরা সেই নাফসকে হত্যা করো না, যা আল্লাহ হারাম করেছেন, সঙ্গত কারণ ছাড়া। যে অন্যায়ভাবে নিহত হয় আমি অবশ্যই তার অভিভাবককে ক্ষমতা দিয়েছি। সুতরাং হত্যার ব্যাপারে সে সীমালঙ্ঘন করবে না; নিশ্চয় সে হবে সাহায্যপ্রাপ্ত। [ সূরা বনী ইসরাইল, আয়াত : ৩৩] এ আয়াতে কিসাস তথা হত্যার বদলা হিসেবে হত্যার বিধানের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। অন্য সূরায় যেটি পরিষ্কার করে বলা হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা যেমন বলেন, ﴿ ﻭَﻛَﺘَﺒۡﻨَﺎ ﻋَﻠَﻴۡﻬِﻢۡ ﻓِﻴﻬَﺎٓ ﺃَﻥَّ ﭐﻟﻨَّﻔۡﺲَ ﺑِﭑﻟﻨَّﻔۡﺲِ ﻭَﭐﻟۡﻌَﻴۡﻦَ ﺑِﭑﻟۡﻌَﻴۡﻦِ ﻭَﭐﻟۡﺄَﻧﻒَ ﺑِﭑﻟۡﺄَﻧﻒِ ﻭَﭐﻟۡﺄُﺫُﻥَ ﺑِﭑﻟۡﺄُﺫُﻥِ ﻭَﭐﻟﺴِّﻦَّ ﺑِﭑﻟﺴِّﻦِّ ﻭَﭐﻟۡﺠُﺮُﻭﺡَ ﻗِﺼَﺎﺹٞۚ ﻓَﻤَﻦ ﺗَﺼَﺪَّﻕَ ﺑِﻪِۦ ﻓَﻬُﻮَ ﻛَﻔَّﺎﺭَﺓٞ ﻟَّﻪُۥۚ ﻭَﻣَﻦ ﻟَّﻢۡ ﻳَﺤۡﻜُﻢ ﺑِﻤَﺎٓ ﺃَﻧﺰَﻝَ ﭐﻟﻠَّﻪُ ﻓَﺄُﻭْﻟَٰٓﺌِﻚَ ﻫُﻢُ ﭐﻟﻈَّٰﻠِﻤُﻮﻥَ ٤٥ ﴾ ‏[ ﺍﻟﻤﺎﺋﺪﺓ : ٤٥] ‘আর আমি এতে তাদের উপর অবধারিত করেছি যে, প্রাণের বিনিময়ে প্রাণ, চোখের বিনিময়ে চোখ, নাকের বিনিময়ে নাক, কানের বিনিময়ে কান ও দাঁতের বিনিময়ে দাঁত এবং জখমের বিনিময়ে সমপরিমাণ জখম। অতঃপর যে তা ক্ষমা করে দেবে, তার জন্য তা কাফ্ফারা হবে। আর আল্লাহ যা নাযিল করেছেন, তার মাধ্যমে যারা ফয়সালা করবে না, তারাই যালিম।’ [ সূরা আল-মায়িদা, আয়াত : ৪৫] বর্তমান অন্যায় অবিচারে ভরা জগতের অনেক মানুষ ইসলামের এ বিধানটিকে অমানবিক আবার কোনো কোনো অবিশ্বাসী একে বর্বর পর্যন্তও বলে বসেন। অথচ বর্তমান পৃথিবীর বাস্তবচিত্রও সাক্ষ্য দেয় আপাতদৃষ্টিতে কঠোর মনে হলেও এর মাধ্যমেই মানবজাতির মুক্তি ও শান্তি নিশ্চিত করা হয়েছে। আমরা বুঝি না বলেই যত অমূলক সমালোচনা। কিসাসের আয়াতের শেষাংশে যেমন ‘বিবেকসম্পন্নগণ’ বলে ইঙ্গিত করা হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ﴿ ﻳَٰٓﺄَﻳُّﻬَﺎ ﭐﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺀَﺍﻣَﻨُﻮﺍْ ﻛُﺘِﺐَ ﻋَﻠَﻴۡﻜُﻢُ ﭐﻟۡﻘِﺼَﺎﺹُ ﻓِﻲ ﭐﻟۡﻘَﺘۡﻠَﻰۖ ﭐﻟۡﺤُﺮُّ ﺑِﭑﻟۡﺤُﺮِّ ﻭَﭐﻟۡﻌَﺒۡﺪُ ﺑِﭑﻟۡﻌَﺒۡﺪِ ﻭَﭐﻟۡﺄُﻧﺜَﻰٰ ﺑِﭑﻟۡﺄُﻧﺜَﻰٰۚ ﻓَﻤَﻦۡ ﻋُﻔِﻲَ ﻟَﻪُۥ ﻣِﻦۡ ﺃَﺧِﻴﻪِ ﺷَﻲۡﺀٞ ﻓَﭑﺗِّﺒَﺎﻉُۢ ﺑِﭑﻟۡﻤَﻌۡﺮُﻭﻑِ ﻭَﺃَﺩَﺍٓﺀٌ ﺇِﻟَﻴۡﻪِ ﺑِﺈِﺣۡﺴَٰﻦٖۗ ﺫَٰﻟِﻚَ ﺗَﺨۡﻔِﻴﻒٞ ﻣِّﻦ ﺭَّﺑِّﻜُﻢۡ ﻭَﺭَﺣۡﻤَﺔٞۗ ﻓَﻤَﻦِ ﭐﻋۡﺘَﺪَﻯٰ ﺑَﻌۡﺪَ ﺫَٰﻟِﻚَ ﻓَﻠَﻪُۥ ﻋَﺬَﺍﺏٌ ﺃَﻟِﻴﻢٞ ١٧٨ ﻭَﻟَﻜُﻢۡ ﻓِﻲ ﭐﻟۡﻘِﺼَﺎﺹِ ﺣَﻴَﻮٰﺓٞ ﻳَٰٓﺄُﻭْﻟِﻲ ﭐﻟۡﺄَﻟۡﺒَٰﺐِ ﻟَﻌَﻠَّﻜُﻢۡ ﺗَﺘَّﻘُﻮﻥَ ١٧٩ ﴾ ‏[ ﺍﻟﺒﻘﺮﺓ : ١٧٨، ١٧٩ ] ‘হে মুমিনগণ, নিহতদের ব্যাপারে তোমাদের উপর ‘কিসাস’ ফরয করা হয়েছে। স্বাধীনের বদলে স্বাধীন, দাসের বদলে দাস, নারীর বদলে নারী। তবে যাকে কিছুটা ক্ষমা করা হবে তার ভাইয়ের পক্ষ থেকে, তাহলে সততার অনুসরণ করবে এবং সুন্দরভাবে তাকে আদায় করে দেবে। এটি তোমাদের রবের পক্ষ থেকে হালকাকরণ ও রহমত। সুতরাং এরপর যে সীমালঙ্ঘন করবে, তার জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আযাব। আর হে বিবেকসম্পন্নগণ, কিসাসে রয়েছে তোমাদের জন্য জীবন, আশা করা যায় তোমরা তাকওয়া অবলম্বন করবে।’ [ সূরা আল-বাকারা, আয়াত : ১৭৮-১৭৯] পৃথিবীতে হত্যার পরিসংখ্যান দেখলে জানা যাবে, সৌদি আরব যেখানে একমাত্র এই কিসাস ব্যবস্থা এখনো বলবৎ রয়েছে, সবচেয়ে কম খুনোখুনির ঘটনা ঘটে। ইসলামকে যারা বর্বর বলে তারা শুধু জ্ঞানপাপীই নয়, মূর্খও বটে। কারণ, ইসলামই পৃথিবীর একমাত্র ধর্ম যেখানে যে কোনো নিরপরাধ মানুষের প্রাণসংহারকে মানবতাবিরোধী ও মানবজাতির হত্যার তুল্য অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ﴿ ﻣِﻦۡ ﺃَﺟۡﻞِ ﺫَٰﻟِﻚَ ﻛَﺘَﺒۡﻨَﺎ ﻋَﻠَﻰٰ ﺑَﻨِﻲٓ ﺇِﺳۡﺮَٰٓﺀِﻳﻞَ ﺃَﻧَّﻪُۥ ﻣَﻦ ﻗَﺘَﻞَ ﻧَﻔۡﺴَۢﺎ ﺑِﻐَﻴۡﺮِ ﻧَﻔۡﺲٍ ﺃَﻭۡ ﻓَﺴَﺎﺩٖ ﻓِﻲ ﭐﻟۡﺄَﺭۡﺽِ ﻓَﻜَﺄَﻧَّﻤَﺎ ﻗَﺘَﻞَ ﭐﻟﻨَّﺎﺱَ ﺟَﻤِﻴﻌٗﺎ ﻭَﻣَﻦۡ ﺃَﺣۡﻴَﺎﻫَﺎ ﻓَﻜَﺄَﻧَّﻤَﺎٓ ﺃَﺣۡﻴَﺎ ﭐﻟﻨَّﺎﺱَ ﺟَﻤِﻴﻌٗﺎۚ ﻭَﻟَﻘَﺪۡ ﺟَﺎٓﺀَﺗۡﻬُﻢۡ ﺭُﺳُﻠُﻨَﺎ ﺑِﭑﻟۡﺒَﻴِّﻨَٰﺖِ ﺛُﻢَّ ﺇِﻥَّ ﻛَﺜِﻴﺮٗﺍ ﻣِّﻨۡﻬُﻢ ﺑَﻌۡﺪَ ﺫَٰﻟِﻚَ ﻓِﻲ ﭐﻟۡﺄَﺭۡﺽِ ﻟَﻤُﺴۡﺮِﻓُﻮﻥَ ٣٢ ﴾ ‏[ ﺍﻟﻤﺎﺋﺪﺓ : ٣٢ ] ‘এ কারণেই, আমি বনী ইসরাঈলের ওপর এই হুকুম দিলাম যে, যে ব্যক্তি কাউকে হত্যা করা কিংবা যমীনে ফাসাদ সৃষ্টি করা ছাড়া যে কাউকে হত্যা করল, সে যেন সব মানুষকে হত্যা করল। আর যে তাকে বাঁচাল, সে যেন সব মানুষকে বাঁচাল। আর অবশ্যই তাদের কাছে আমার রাসূলগণ সুস্পষ্ট নিদর্শনসমূহ নিয়ে এসেছে। তা সত্ত্বেও এরপর জমিনে তাদের অনেকে অবশ্যই সীমালঙ্ঘনকারী।’ [সূরা মায়েদা, আয়াত : ৩২] তেমনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামও হত্যাকাণ্ডকে গুরুতর অপরাধ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। আনাস বিন মালেক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, « ﺃَﻛْﺒَﺮُ ﺍﻟْﻜَﺒَﺎﺋِﺮِ ﺍﻹِﺷْﺮَﺍﻙُ ﺑِﺎﻟﻠَّﻪِ ﻭَﻗَﺘْﻞُ ﺍﻟﻨَّﻔْﺲِ ، ﻭَﻋُﻘُﻮﻕُ ﺍﻟْﻮَﺍﻟِﺪَﻳْﻦِ ، ﻭَﻗَﻮْﻝُ ﺍﻟﺰُّﻭﺭِ » . ‘কবীরা গুনাহগুলোর মধ্যে সবচে বড় গুনাহ হলো আল্লাহর সঙ্গে শিরক করা, নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করা, পিতামাতার অবাধ্য হওয়া এবং মিথ্যা কথা বলা।’ [বুখারী : ৬৮৭১; মুসলিম : ৮৮] আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, « ﺃَﻭَّﻝُ ﻣَﺎ ﻳُﻘْﻀَﻰ ﺑَﻴْﻦَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ ﻓِﻰ ﺍﻟﺪِّﻣَﺎﺀِ » . ‘কিয়ামতের দিন মানুষের মধ্যে প্রথম বিচার করা হবে রক্তপাত সম্পর্কে।’[1] [বুখারী : ৬৩৫৭; মুসলিম : ৩১৭৮] আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন : « ﺍﺟْﺘَﻨِﺒُﻮﺍ ﺍﻟﺴَّﺒْﻊَ ﺍﻟْﻤُﻮﺑِﻘَﺎﺕِ ‏» . ﻗَﺎﻟُﻮﺍ ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻭَﻣَﺎ ﻫُﻦَّ ﻗَﺎﻝَ ‏« ﺍﻟﺸِّﺮْﻙُ ﺑِﺎﻟﻠَّﻪِ ، ﻭَﺍﻟﺴِّﺤْﺮُ ، ﻭَﻗَﺘْﻞُ ﺍﻟﻨَّﻔْﺲِ ﺍﻟَّﺘِﻰ ﺣَﺮَّﻡَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺇِﻻَّ ﺑِﺎﻟْﺤَﻖِّ ، ﻭَﺃَﻛْﻞُ ﺍﻟﺮِّﺑَﺎ ، ﻭَﺃَﻛْﻞُ ﻣَﺎﻝِ ﺍﻟْﻴَﺘِﻴﻢِ ، ﻭَﺍﻟﺘَّﻮَﻟِّﻰ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟﺰَّﺣْﻒِ ، ﻭَﻗَﺬْﻑُ ﺍﻟْﻤُﺤْﺼَﻨَﺎﺕِ ﺍﻟْﻤُﺆْﻣِﻨَﺎﺕِ ﺍﻟْﻐَﺎﻓِﻼَﺕِ » . ‘তোমরা সাতটি ধ্বংসাত্মক কাজ থেকে বিরত থাক।সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, সেগুলো কী হে আল্লাহর রাসূল? তিনি বললেন, ১. আল্লাহর সাথে শরীক করা২. জাদু করা৩. অন্যায়ভাবে নিরপরাধ লোককে হত্যা করা৪. সুদ খাওয়া৫. এতিমের সম্পদ আত্মসাৎ করা৬. রণক্ষেত্র থেকে পলায়ন করা৭. সুরক্ষিত পবিত্রা নারীকে অপবাদ দেওয়া।’ [বুখারী : ৬৮৫৬; মুসলিম : ১২৯] ইবন উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন : « ﻟَﻦْ ﻳَﺰَﺍﻝَ ﺍﻟْﻤُﺆْﻣِﻦُ ﻓِﻰ ﻓُﺴْﺤَﺔٍ ﻣِﻦْ ﺩِﻳﻨِﻪِ ، ﻣَﺎ ﻟَﻢْ ﻳُﺼِﺐْ ﺩَﻣًﺎ ﺣَﺮَﺍﻣًﺎ » . ‘মুমিন তার দীনের ব্যাপারে সর্বদা অবকাশের মধ্যেই থাকে যাবৎ না সে নিষিদ্ধ রক্তপাত ঘটায়।’ [বুখারী : ৬৮৬২] ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন : « ﻳَﺠِﻰﺀُ ﺍﻟْﻤَﻘْﺘُﻮﻝُ ﺑِﺎﻟْﻘَﺎﺗِﻞِ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟْﻘِﻴَﺎﻣَﺔِ ﻧَﺎﺻِﻴَﺘُﻪُ ﻭَﺭَﺃْﺳُﻪُ ﺑِﻴَﺪِﻩِ ﻭَﺃَﻭْﺩَﺍﺟُﻪُ ﺗَﺸْﺨُﺐُ ﺩَﻣًﺎ ﻳَﻘُﻮﻝُ ﻳَﺎ ﺭَﺏِّ ﻫَﺬَﺍ ﻗَﺘَﻠَﻨِﻰ ﺣَﺘَّﻰ ﻳُﺪْﻧِﻴَﻪُ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﻌَﺮْﺵِ ». ‘কিয়ামতের দিন নিহত ব্যক্তি হন্তারককে নিয়ে আসবে। হন্তারকের চুলের অগ্রভাগ ও মাথা নিহতের হাতের মুষ্ঠিতে থাকবে আর তার কণ্ঠনালী থেকে তখন রক্ত ঝরতে থাকবে। সে বলবে, হে রব, এ ব্যক্তি আমাকে হত্যা করেছে। এমনকি সে তাকে আরশের কাছে নিয়ে যাবে।’ [তিরমিযী : ২৯৫৫; মুসনাদ আহমদ : ২৫৫১, সহীহ, সিলসিলা সহীহা : ২৬৯৭] আবূ সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন : ﻳَﺨْﺮُﺝُ ﻋُﻨُﻖٌ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ ﻳَﺘَﻜَﻠَّﻢُ ﻳَﻘُﻮﻝُ : ﻭُﻛِّﻠْﺖُ ﺍﻟْﻴَﻮْﻡَ ﺑِﺜَﻼَﺛَﺔٍ : ﺑِﻜُﻞِّ ﺟَﺒَّﺎﺭٍ ، ﻭَﺑِﻤَﻦْ ﺟَﻌَﻞَ ﻣَﻊَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺇِﻟَﻬًﺎ ﺁﺧَﺮَ ، ﻭَﺑِﻤَﻦْ ﻗَﺘَﻞَ ﻧَﻔْﺴًﺎ ﺑِﻐَﻴْﺮِ ﻧَﻔْﺲٍ ، ﻓَﻴَﻨْﻄَﻮِﻱ ﻋَﻠَﻴْﻬِﻢْ ﻓَﻴَﻘْﺬِﻓُﻬُﻢْ ﻓِﻲ ﻏَﻤَﺮَﺍﺕِ ﺟَﻬَﻨَّﻢَ . ‘জাহান্নাম থেকে একটি গলা বের হয়ে কথা বলতে শুরু করবে। সে বলবে, আজ আমি তিন ব্যক্তির প্রতি ন্যস্ত হয়েছি : প্রত্যেক অত্যাচারী, যে আল্লাহর সঙ্গে অন্য কাউকে শরীক স্থির করে এবং ওই ব্যক্তি যে অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করে। অতপর সে তাদের থাবা দিয়ে কব্জা করবে এবং জাহান্নামের গহীনে তাদের নিক্ষেপ করবে।’ [মুসনাদ আহমদ : ১১৩৭২, সহীহ, সিলসিলা সহীহা : ২৬৯৯] আবদুল্লাহ ইবন উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : « ﺇِﻥَّ ﻣِﻦْ ﻭَﺭْﻃَﺎﺕِ ﺍﻷُﻣُﻮﺭِ ﺍﻟَّﺘِﻰ ﻻَ ﻣَﺨْﺮَﺝَ ﻟِﻤَﻦْ ﺃَﻭْﻗَﻊَ ﻧَﻔْﺴَﻪُ ﻓِﻴﻬَﺎ ، ﺳَﻔْﻚَ ﺍﻟﺪَّﻡِ ﺍﻟْﺤَﺮَﺍﻡِ ﺑِﻐَﻴْﺮِ ﺣِﻠِّﻪِ » . ‘যেসব পরিত্রাণঅযোগ্য ধ্বংসে মানুষ পতিত হয় তার অন্যতম হলো বৈধ কারণ ছাড়া নিষিদ্ধ রক্ত ঝরানো।’ [বুখারী : ৬৮৬৩] বলাবাহুল্য, এসব গেল হত্যা ও খুনোখুনির আইনী প্রতিকারের দিক। সত্যিকারার্থে পরিত্রাণ চাইলে আমাদেরকে এর নৈতিক দিকগুলোও বিবেচনায় নিতে হবে। ক্রমবর্ধমান মূল্যবোধের অবক্ষয় ও মানবিক গুণাবলির অধোঃপাতের কথাও চিন্তা করতে হবে। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ﴿ ﻇَﻬَﺮَ ﭐﻟۡﻔَﺴَﺎﺩُ ﻓِﻲ ﭐﻟۡﺒَﺮِّ ﻭَﭐﻟۡﺒَﺤۡﺮِ ﺑِﻤَﺎ ﻛَﺴَﺒَﺖۡ ﺃَﻳۡﺪِﻱ ﭐﻟﻨَّﺎﺱِ ﻟِﻴُﺬِﻳﻘَﻬُﻢ ﺑَﻌۡﺾَ ﭐﻟَّﺬِﻱ ﻋَﻤِﻠُﻮﺍْ ﻟَﻌَﻠَّﻬُﻢۡ ﻳَﺮۡﺟِﻌُﻮﻥَ ٤١ ﴾ ‏[ ﺍﻟﺮﻭﻡ : ٤١ ] ‘মানুষের কৃতকর্মের দরুন স্থলে ও সমুদ্রে ফাসাদ প্রকাশ পায়। যার ফলে আল্লাহ তাদের কতিপয় কৃতকর্মের স্বাদ তাদেরকে আস্বাদন করান, যাতে তারা ফিরে আসে।’ [সূরা আর-রূম, আয়াত : ৪১] সত্যিই তো আজ যেসব সামাজিক ব্যধি ও সমস্যায় আমরা নাকাল, এর দায় তো আমাদেরই। আমাদের ব্যক্তিগত আমল ও আচরণের দিকে তাকালেই সেটা পরিষ্কার দেখা যায়। কিয়ামত যত ঘনিয়ে আসছে অবস্থার যেন ততই অবনতি ঘটছে। আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন : ﻟَﺎ ﺗَﻘُﻮﻡُ ﺍﻟﺴَّﺎﻋَﺔُ ﺣَﺘَّﻰ ﻳَﻜْﺜُﺮَ ﺍﻟْﻬَﺮْﺝُ ﻗَﺎﻟُﻮﺍ ﻭَﻣَﺎ ﺍﻟْﻬَﺮْﺝُ ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟْﻘَﺘْﻞُ ﺍﻟْﻘَﺘْﻞُ ‘কিয়ামত ততক্ষণ সংঘটিত হবে না যতক্ষণ না হারাজ বেশি হবে। সাহাবায়ে কিরাম জিজ্ঞাসা করলেন, ‘হারাজ’ কী হে আল্লাহর রাসূল? তিনি বললেন হত্যা, হত্যা।’ [মুসলিম : ৫১৪৩] হত্যাকাণ্ডের এ রাহুগ্রাস থেকে মুক্তি পেতে আমাদের যেমন আল্লাহর আইনের সুফল অনুধাবন জরুরী, আইনের শাসন ও ন্যায় বিচার জরুরী, তেমনি প্রয়োজন নিজেদের সব ধরনের অন্যায়, অবিচার ও যাবতীয় পাপাচার থেকে একনিষ্ঠভাবে তাওবা করা। নিজেদের সন্তান তথা ভবিষ্যত প্রজন্মকে আল্লাহভীতি ও নৈতিকতার বলে বলীয়ান হিসেবে গড়ে তোলা। সব ধরনের অশ্লীলতা ও বেহায়পনা থেকে তাদেরকে যে কোনো মূল্যে দূরে রাখা। বলিউড হলিউডের সিনেমা আর স্যাটেলাইট কালচার আমাদের সন্তানদের মানবিক বিকাশকে শুধু বাধাগ্রস্তই করছে না, তাদেরকে হিংস্র ও নরপশু বানিয়ে ছাড়ছে। পার্থিব ভোগ লালসা মানুষকে অন্ধ ও বধির বানিয়ে ছাড়ছে। আল্লাহ আমাদের অনুধাবন ও সংশোধনের তাওফীক দান করুন। আমীন। [1].ইমাম নববী (রহ.) বলেন, এ হাদীসে রক্তপাতের অপরাধের গুরুতরতা তুলে ধরা হয়েছে। আর তা হলো কিয়ামতের দিন মানুষের মধ্যে যত বিষয়ে বিচারাচার হবে রক্তপাত তার মধ্যে প্রথম। এ হাদীসটি সুনানগুলোয় বর্ণিত, ﺃَﻭَّﻝُ ﻣَﺎ ﻳُﺤَﺎﺳَﺐُ ﺑِﻪِ ﺍﻟْﻌَﺒْﺪُ ﺍﻟﺼَّﻼَﺓُ‘প্রথম যে বিষয়ে বিচার করা হবে তা হলো সালাত’ হাদীসের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়। [তিরমিযী : ৩৯৯১] কারণ, সালাতের হাদীসের বিষয়টি বান্দা ও আল্লাহর হকের সঙ্গে সম্পৃক্ত। পক্ষান্তরে আলোচ্য হাদীসটি বান্দার হক সংক্রান্ত। [শরহু সহীহ মুসলিম : ১১/১৬৭]

Post a Comment

Please Select Embedded Mode To Show The Comment System.*

Previous Post Next Post