নামাজ অন্যায়-অশ্লীলতা ও অপরাধমুক্ত জীবন গঠনে সহায়ক। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘(হে নবী!) আপনি নামাজ কায়েম করুন। নিশ্চয়ই নামাজ অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে।’ -সূরা আনকাবুত: ৪৫। সত্যিকারভাবে নামাজ আদায়কারী ব্যক্তি, যে নামাজের মধ্যে আল্লাহর হুকুম অনুযায়ী প্রত্যেকটি কাজ সম্পাদন করছে, সে নামাজ শেষ হলেও আল্লাহর হুকুম মেনে যাবতীয় অন্যায়-অশ্লীলতা থেকে বিমুক্ত থাকবে এটাই নামাজের শিক্ষা। আর নামাজের মাধ্যমে আল্লাহ বান্দার অতীত অপরাধ মোচন করে দেন।
নামাজ আল্লাহর ভয় জাগ্রত করে, বান্দাকে আল্লাহকে ভয় করতে শেখায়। অজু না করে, ঠিকমতো সূরা-কেরাত পাঠ না করে নামাজ আদায় করলে কারো তা বোঝার উপায় নেই। কিন্তু একমাত্র আল্লাহকে ভয় করেই বান্দা সমস্ত লোকচক্ষুর আড়ালেও তার হুকুম লংঘন করতে ভয় পায়। তাই আল্লাহভীতি জীবনের সকল ক্ষেত্রে মেনে আসলেই ব্যক্তি যাবতীয় অন্যায় থেকে বিরত থাকতে পারে। এতে একটি অনাচারমুক্ত সমাজ গঠন সহজ হয়। তাই তো বলা চলে, নামাজ বান্দাকে বিনয়ী বানায়।
নামাজে বিনীত, বিনম্র হওয়ার মাধ্যমে একজন নামাজী ব্যক্তি তার ব্যক্তি জীবনে বিনয়ী হওয়ার প্রশিক্ষণ পায় যা তার চরিত্রকে সুরভিত করে। এ বিষয়ে কোরানে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে তোমরা সাহায্য প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই নামাজ খুব কঠিন কাজ। কিন্তু বিনয়ী অনুগত লোকদের জন্য তা কঠিন নয়।’ -সূরা বাকারা: ৪৫।
নামাজকে সংঘবদ্ধ জীবনের প্রতিচ্ছবিও বলা যায়। কারণ, পুরুষদেরকে জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করতে হয়। যার মাধ্যমে মুমিনের সংঘবদ্ধতার অপরিহার্যতা প্রমাণিত হয়। জামাতে নামাজ আদায়ের মাধ্যমে সমাজের সবার সুখ-দুঃখের খোঁজ নেয়া যায়। সম্মিলিতভাবে আল্লাহর বিধান জানা এবং মানার ব্যবস্থা হয়। জামাতে নামাজ মুমিনদেরকে মজবুত দেয়ালের মতো ঐক্যবদ্ধ করে গড়ে তোলে- যারা সমস্ত আল্লাহদ্রোহিতার মোকাবিলায় আওয়াজ তুলতে পারে। নামাজ মানুষকে পবিত্র জীবনযাপনে অভ্যস্ত করে।
সূরা মায়েদার ৬ নম্বর আয়াতের আলোকে অজু-গোসল সম্পাদন করে পাক-পবিত্র হওয়া নামাজ আদায় করার পূর্বশর্ত। নামাজের জন্য বান্দা পবিত্র হয় যা আর অন্য কোনো কারণে হওয়া এতটা জরুরি নয়। তাই নামাজই মানুষকে পবিত্র-পরিচ্ছন্ন জিন্দেগি যাপনে সহায়তা করে। পরিষ্কার থাকার অভ্যাস গড়ে তোলে।
Tags:
ধর্ম ও জীবন