'ইসলামে কোনো ভালোবাসা দিবস নেই, এটি মুসলিম জাতির এক সর্বনাশী বার্তা'

ইসলাম ডেস্ক: ইসলামে কোনো ভালোবাসা দিবস নেই , এটি মুসলিম জাতির এক সর্বনাশী বার্তা বলেই মনে করেন আলেম ওলামারা। স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসা, বাবা-মা, আত্মীয় স্বজন এমনকি প্রতিবেশীকে ভালোবাসতে ইসলাম জোর দিয়েছে। মূলত মানুষের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করতে কুরআন ও হাদিসে বহুবার জোর দেওয়া হয়েছে।
ভালোবাসার নামে মানুষকে অশ্লীলতার দিকে ধাবিত করছে এই দিনটির কার্যক্রম। আর অশ্লীলতা ব্যাভিচারের দিকে ধাবিত করে। অশ্লীলতার প্রথম মহড়াই সাধারণত মানুষকে নিয়ে যায় ব্যাভিচারের চূড়ান্ত পর্যায়ে।
ফুজাইল ইবনে ইয়াজ (রহঃ) বলেছেন, অশ্লীলতাই হচ্ছে ব্যাভিচারের মন্ত্র।
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, তোমরা ব্যাভিচারের ধারে কাছেও যেয়ো না, নিঃসন্দেহে তা একটি অশ্লীলতা, আর এটি এক পাপের পথ। (সূরা বনী ইসরাইল, আয়াতঃ৩১)
এই আয়াতে বলা হয়নি ব্যাভিচার করো না। বরং বলা হয়েছে ব্যাভিচারের কাছেও যাবে না। অশ্লীলতা হচ্ছে ব্যাভিচারের নৈকট্য।
বিশ্বের অন্যতম মুসলিম স্কলার আহমদ ওফিক পাশা উসমানী বলেন, তাঁর এক পশ্চিমা সহকর্মী তাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, মুসলিম মেয়েরা ঘরে আবদ্ধ থাকবে কেন? তারা বাইরের সমাজে পুরুষদের সঙ্গে মেলামেশা করে না কেন? তখন তিনি জবাবে বলেছিলেন, কারণ তারা চায় না নিজের স্বামী ছাড়া অন্য কারো সন্তান জন্ম দিক।
পর্দাই হচ্ছে প্রথম দরজার তালা। এই তালা ঠিক থাকলে ব্যাভিচারের শেষ স্তরের আর খোঁজ পাওয়া যাবে না। আর এই তালা ভেঙে দরজাটা খুলে গেলে অতি দ্রুত ধ্বংসের অন্ধকার গহ্বরে গিয়ে পৌঁছাবে।
ভালোবাসা দিবসের নামে যা করা হচ্ছে তা সেই দরজা ভেঙে দেয়া হচ্ছে। এখন ব্যাভিচারের পথ খুলে দেওয়ার পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলা হয়ে থাকে, ফুর্তির ব্যবস্থা থাকতেই হবে। ফুর্তির ব্যবস্থা না থাকলে আমরা আদিম যুগে পরিণত হব। ছোট্ট এই ফুর্তি শব্দের মধ্যেই রয়েছে নারীর সর্বনাশ।
নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, অবশ্যই আমার উম্মতের মধ্যে এমন কিছু গোষ্ঠীর জন্ম হবে,যারা ব্যাভিচার ,রেশম,মদ ও গান-বাদ্যের সব উপাদানকে হালাল করতে চাইবে। (বুখারী শরীফ)
আল্লাহ তায়ালা বলেন, হে নবী আপনি মুমিনদেরকে বলুন,তারা যেন তাদের দৃষ্টি অবনত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গের হেফাজত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।(সুরা আন নুর,আয়াতঃ৩০)
এর পরের আয়াতেই একই বিষয় অর্থাৎ দৃষ্টি অবনত রাখার আদেশ করা হয়েছে নারীদের।
আল্লাহ তায়ালা বলেন, হে নবী আপনি মুমিন নারীদেরকে বলে দিন, যাতে তারা তাদের দৃষ্টিসমূহকে অবনত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে এবং তাদের সাজসজ্জা প্রকাশ না করে। তবে শরীরের যে অঙ্গ প্রকাশমান এবং তারা যেন তাদের ওড়নাকে বক্ষদেশে ফেলে রাখে।(সুরা আন নুর,আয়াতঃ৩১)
কুরআন ও হাদিসে এটিই স্পষ্ট করে বলা হয়েছে যে, উৎসব বা ফূর্তির নামে সীমা লঙ্ঘন করা যাবে না। যেভাবে আল্লাহ ও রাসুল চলতে নির্দেশ দিয়েছেন সেভাবেই প্রত্যেক মুমিনকে চলতে হবে।

Post a Comment

Please Select Embedded Mode To Show The Comment System.*

Previous Post Next Post