প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মর্যাদা

আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমে অনেক আয়াতে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সম্মান ও মর্যাদা বর্ণনা করেছেন। প্রিয়নবির সাক্ষ্যের মাধ্যমেই সব নবিগণ রেহাই পাবেন। মানুষের ঈমান না আনার জন্য তিনি থাকবেন জবাবদিহিমুক্ত।

সব নবি রাসুলগণের কাছ থেকেই তাঁর প্রতি ঈমান এবং তাঁকে সহযোগিতা করার ব্যাপারে অঙ্গীকার গ্রহণ করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলার ওয়াদা যে, তিনি প্রিয়নবিকে সন্তুষ্ট করবেন। তাঁর উম্মতকে সর্বোত্তম উম্মত হিসেবে ঘোষণা করা।

বিভিন্ন প্রসঙ্গে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেই সাহাবায়ে কেরামের মাঝে তাঁর মর্যাদার বিষয়টি তুলে ধরেছেন-

হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন যে, একবার কয়েকজন সাহাবি পরস্পর আলোচনায় রত ছিলেন। তখন সাহাবাদের মধ্যে একজন বললেন, ‘আল্লাহ তাআলা হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামকে ‘খলিল’ (দোস্ত) হিসেবে গ্রহণ করেছেন।’
দ্বিতীয় জন বললেন, ‘হজরত আদম আলাইহিস সালাম ‘সফিউল্লাহ’ হিসেবে পরিগণিত হয়েছেন।’
তৃতীয়জন বললেন, ‘আল্লাহ তাআলা হজরত ঈসা আলাইহিস সালামকে ‘কালেমাতুল্লাহ’ এবং রুহুল্লাহ’ হিসেবে ঘোষণা করেছেন।’
চতুর্থজন বললেন, ‘হজরত মুসা আলাইহিস সালামকে আল্লাহ তাআলা ‘কালিমুল্লাহ’ খেতাব প্রদান করেছেন।’

এমন সময় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেখানে আগমন করে ইরশাদ করলেন-
‘আমি তোমাদের সব কথা-বার্তা শুনতে পেয়েছি। এ সব নবি বাস্তবে এমনই ছিল। অর্থাৎ তোমাদের সব তথ্যই সত্য। আর আমি ‘হাবিবুল্লাহ’ (আল্লাহর প্রিয়); সে জন্য আমার কোনো অহংকার নেই।’ (খোলাসাতুত তাফসির, তাফসিরে মাজহারি ও তাবসিরে কবির)

প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘তোমরা আল্রাহ কাছে ওসিলা তালাশ কর। সাবাহায়ে কেরাম আরজ করলেন, ‘ওসিলা কি জিনিস? প্রিয়নবি বললেন, ‘জান্নাতের স্তর। এ স্তরটি একজন মানুষই লাভ করবে। আমি আশা করছি- ওই ব্যক্তিটি আমিই হবো।’

ইমাম মুসলিম রহমাতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন-
>> ‘আর হজরত রাসুল্লল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সারা বিশ্বের সরদার।’
>> ‘তিনিই সর্ব প্রথম জান্নাতে প্রবেশ করবেন।’
>> ‘তিনিই ক্ষমাপ্রাপ্তির সুসংবাদ শোনাবেন এবং তিনিই ভাষণ দান করবেন। আর তিনি আদম সন্তানের মধ্যে সর্বোচ্চ মর্যাদার অধিকারী এবং নবিগণের ইমাম। তিনি সর্বশেষ নবি এবং তাঁর জামানা সর্বশ্রেষ্ঠ জামানা।’

সর্বোপরি তাঁর সর্বশ্রেষ্ঠ মর্যাদার কথা ইমাম বুখারি স্বীয় গ্রন্থ বুখারিতে এভাবে বর্ণনা করেছেন-
‘অন্যান্য নবিগণ নিজ সম্প্রদায়ের জন্য নবি হিসেবে প্রেরিত হতেন আর তিনি সারা বিশ্বের মানুষের জন্য নবি এবং রাসুল হিসেবে প্রেরিত হয়েছেন।’

পরিশেষে…
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামে শ্রেষ্ঠত্ব ও বিশেষ মর্যাদা সুস্পষ্ট হয়েছে পবিত্র মেরাজের রাতে। এ রাতে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সব নবি-রাসুলদের ইমাম হওয়া এবং বিশেষ নৈকট্য ও মহব্বত লাভ করা তাঁর সর্বোচ্চ মর্যাদা প্রমাণের জন্য যথেষ্ট।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তাঁর যথাযথ মর্যাদা ও সম্মান প্রদানের তাওফিক দান করুন। তাঁর মর্যাদায় বেশি বেশি দরূদ ও সালাম পাঠ করার তাওফিক দান করুন। প্রিয়নবির ভালবাসা ও সুন্নাতের অনুসরণের মাধ্যমে দুনিয়ার কল্যাণ ও পরকালের সুপারিশ ও সফলতা লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।

Post a Comment

Please Select Embedded Mode To Show The Comment System.*

Previous Post Next Post