শব-ই-বরাতের নামাজ পড়ার নিয়ম

আজ পবিত্র শব-ই-বরাত বা লাইলাতুল বরাত। শাবান
মাসের ১৫ তারিখে শবে বরাতের রাত্রী বলে
ঘোষনা করা হয়। শব শব্দটি ফার্সি যার অর্থ রাত আর
বরাত শব্দের অর্থ ভাগ্য। বিশেষ এ রাতে মহান
আল্লাহ তায়ালা আগামী এক বছরের জন্য মানুষের
রিজিক, জন্ম-মৃত্যু ইত্যাদি বিষয় নির্ধারণসহ তার
সৃষ্ট জীবের ওপর অসীম রহমত নাজিল করে থাকেন
বলে এ রাতকে শবেবরাত বা ভাগ্যরজনী বলা হয়।
এক হাদিসে উল্লেখ আছে, ব্যাভিচারী ও মুশরিক
ছাড়া আর সবার মনোবাসনা এই রাতে পূরণ করা হবে।
তাই এই সৌভাগ্যের রাতে আমরা যেন একটু কষ্ট করে
আল্লাহর দরবারে হাত উঠাই। রহমত চাই, মাগফেরাত
চাই, উন্নতি চাই আমাদের দেশ, দেশের মানুষ,
নিজের পরিবার, আত্বীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের
জন্য।
এই রাত্রী হল ক্ষমা প্রার্থনার জন্য এক উত্তম
রাত্রী, যার ফজীলত হাজার রাতের ইবাদতের
চেয়েও উত্তম। এ রাতে বান্দা তার সকল পাপ
কাজের ক্ষমা প্রার্থনা করার জন্য আল্লাহর আরশ
উন্মুক্ত পাবে। তাই আমাদের উচিত এই রাতে বেশী
বেশী ইবাদত করা, নফল নামাজ পড়া, জিকির করা,
কুরআন পাঠ করা। এই দিনে সূর্য অস্তমিত হওয়ার
সাথে সাথে আল্লাহ পাকের নূর সর্বনিম্ন আকাশে
অবতীর্ণ হয় এবং বলা হয়- কে আছ গুনাহ মাফ করাতে
চাও? কে আছ তার মনের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করাতে
চাও? কে আছ তার রুজী বৃদ্ধি করাতে চাও? কে আছ
তার রোগ, শোক, দুঃখ কষ্ট দূর করাতে চাও? এরূপ
ঘোষণার সময় যদি কোন বান্দা হাত তুলে মুনাজাত
কর।
শব-ই-বরাতের নামাজ: সাধারণ নফল নামাজের মতই
এই নামাজ। যা দুই রাকাত বিশিষ্ট। যত খুশি পড়া
যায়। এশার নামাজ শেষ করে বেতের নামাজ পড়ার
আগে এই নামাজ পড়া শুরু করা হয়। সূরা ফাতিহার
সাথে যে কোন সূরা মিলিয়ে এই নামাজ পড়া যায়।
অনেকে সূরা ফাতিহার সাথে সূরা ইখলাস বেজোড়
সংখ্যক বার মিলিয়ে পড়েন। ৩, ৫, ৭, ৯, ১১ বার
ইত্যাদি। পড়তে পারেন কিন্তু লক্ষ্য রাখবেন ভুল
যেন না হয়। তবে সূরা ফাতিহার সাথে সাধারণ ছোট
ছোট সূরা মিলিয়ে পড়াই উত্তম।
শব-ই-বরাতের নামাজের নিয়ত: আপনি যে নামাজ
পড়ার উদ্দেশ্যে দাড়িয়েছেন মানের মধ্যে এমন ভাব
আনলেই আপনার নিয়ত হয়ে যাবে। আরবি, বাংলা
যে কোন ভাষাতেই নিয়ত করতে পারেন। বাংলায়
নিয়ত করলে এই ভাবে করতে পারেনঃ ‘শব-ই-বরাতের
দুই রাকাত নফল নামাজ কিবলামুখী হয়ে পড়ছি,
আল্লাহু আকবর।’
সতর্কতা: মনে রাখতে হবে ফরজ নফলের চেয়ে
অনেক বড়। শব-ই-বরাতের নামাজ যেহেতু নফল
সেহেতু নফল পড়তে পড়তে ফরজ পড়া ভুলে গেলে বা
ঘুমের কারণে পড়তে না পারলে কিন্তু সবই শেষ।
অর্থাৎ নফল নামাজ পড়ে পড়ে ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে
পড়লেন আর এই দিকে ফজরের নামাজ পড়তে
পারলেন না। সাবধান এ যেন না হয়। ভাল হয় শব-ই-
বরাতের নফল শেষ করে বেতের নামাজ পড়ে এরপর
ফজর পড়া। যাই করেন নামাজ পড়েন আর ঘুমান
সমস্যা নেই, ঠিক সময় মত উঠে ফজর নামাজ যেন
পড়তে পারেন সেই দিকে খেয়াল রাখবেন।

Post a Comment

Please Select Embedded Mode To Show The Comment System.*

Previous Post Next Post