পবিত্র লাইলাতুল বরাত আজ। ১৫ শাবান অর্থাৎ
শাবানের ১৪ তারিখের দিবাগত রাত সম্পর্কে রাসুল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনেক
হাদিস রয়েছে। এই বরকতময় রাত ইবাদত বন্দেগী করে
কাটানো উত্তম। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি পাঁচটি রাত
জেগে থাকবে তার জন্য জান্নাত অবধারিত হয়ে
যাবে।
১. জিলহজের অষ্টম রাত। ২. জিলহজের নবম রাত। ৩.
ঈদুল আজহার রাত। ৪. ঈদুল ফিতরের রাত। ৫.
শাবানের ১৫ তারিখের রাত। (আত্তারগিব
ওয়াত্তারহিব)। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম ১৫ শাবানের রাত ইবাদত বন্দেগিতে
কাটাতেন। হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, এক রাতে
আমি রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে
বিছানাতে পেলাম না। তাই তাঁকে খোঁজ করার
উদ্দেশ্যে বের হলাম। দেখতে পেলাম, তিনি
জান্নাতুল বাকিতে আছেন। আমাকে দেখে তিনি
বলে উঠলেন, ‘তুমি কি এই আশঙ্কা করছ যে, আল্লাহ
এবং তার রসুল তোমার সঙ্গে অবিচার করবে? আমি
বললাম, হে আল্লাহর রসুল! আমি ধারণা করছিলাম,
আপনি অন্য কোনো বিবির ঘরে তাশরিফ নিয়েছেন।
রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,
শাবানের ১৫ তারিখ রাতে মহান আল্লাহতায়ালা
দুনিয়ার আসমানে তাশরিফ আনেন এবং বনু কালব
গোত্রের ভেড়া-বকরির পশুগুলোর পশমের চেয়েও
অধিক সংখ্যক লোককে তিনি মাফ করে দেন।
’ (তিরমিজি ইবনে মাজাহ, বায়হাকি, মুসনাদে
আহমদ) রহমত, বরকত ও মাগফিরাতের মাস শাবানের
১৫ তারিখের রাতে নফল ইবাদতের তাগিদ দেওয়া
হয়েছে।
হজরত আলী (রা.) বর্ণিত, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেন, শাবানের রাত যখন উপস্থিত হয়
তখন তোমরা রাত জেগে ইবাদত কর এবং দিনে
রোজা রাখ। কেননা আল্লাহপাক এই রাতে
সূর্যাস্তের পর প্রথম আসমানে অবতরণ করে বলেন,
কোনো ক্ষমাপ্রার্থী কি নেই? আমি তাকে ক্ষমা
করে দেব, কোনো জীবিকা প্রার্থী কি নেই? আমি
তাকে জীবিকা দান করব। কোনো বিপদগ্রস্ত কি
নেই? আমি তাকে বিপদ থেকে মুক্তি দেব। এভাবে
ভোররাত পর্যন্ত ঘোষণা চলতে থাকে (ইবনে মাজা)।
লাইলাতুল বরাত বা শবেবরাতে রাত জেগে নফল
ইবাদত রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের
সুন্নাত। তিনি এই পবিত্র রাতে বেশি ইবাদত ও
দোয়া করতেন, কবর জিয়ারত করতেন।
শবেবরাতের নামাজের জন্য বিশেষ আলাদা কোনো
পদ্ধতি নেই। অন্য সব নামাজের মতোই এই রাতে
নামাজ পড়া যায়। দুই রাকাত করে নামাজ আদায়
করা উত্তম। শবেবরাতে কোরআন তেলাওয়াত,
জিকির-আজকার, দোয়া-ইস্তেগফার ইত্যাদি নেক
আমল যতটা সম্ভব হয় আদায় উত্তম।
মাওলানা মুহাম্মদ সাহেব আলী
লেখক : ইসলামী গবেষক।