রহমান রহীম আল্লাহ্ তায়ালার নামে-
ধৈর্যধারণ
আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে
জীবনের সর্বক্ষেত্রে ধৈর্যধারণ করা ও
আত্মঃসংবরণশীল হওয়া এক মহৎ গুণ। ধৈর্যের
মহত্ত্বতার দিকে লক্ষ্য রেখে আল্লাহ তাআলা
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আদেশ
প্রদান করে বলেন :-
ﻓَﺎﺻْﺒِﺮْ ﻛَﻤَﺎ ﺻَﺒَﺮَ ﺃُﻭﻟُﻮ ﺍﻟْﻌَﺰْﻡِ ﻣِﻦَ ﺍﻟﺮُّﺳُﻞِ َ ﴿ 35 ﴾ ﺍﻷﺣﻘﺎﻑ
অতএব, তুমি ধৈর্যধারণ কর, যেমন ধৈর্যধারণ
করেছেন দৃঢ় প্রতিজ্ঞ রাসূলগণ। (সুরা আহকাফ:
৩৫)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর
আদেশ যথাযথভাবে পালন করেছেন, এমনকি
ধৈর্যধারণ তাঁর অনন্য ও সুমহান চরিত্রে মূর্ত-মান
হয়েছে। তিনি রেসালতের দায়িত্ব পালনের
স্বার্থে দাওয়াতের কণ্টকাকীর্ণ পথে দীর্ঘ
তেইশ বছর ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছেন। নানা
প্রতিকূলতার মুখাপেক্ষী হওয়া সত্ত্বেও তিনি
বিচলিত কিংবা রাগের বশবর্তী হননি। যেমন
কোরাইশ কর্তৃক তাঁকে প্রহার, তাঁর পিঠের উপর
উটের নাড়িভুঁড়ি তুলে দেয়া, আবু তালেব
উপত্যকায় তিন বছর পর্যন্ত তাঁকে অবরুদ্ধ করে
রাখা ; তাঁর প্রতি অধিকাংশ লোকের বৈরী আচরণ ;
জাদুকর, গণক ও পাগল-ইত্যাদি অবমাননামূলক উপাধি
দ্বারা আখ্যা দেয়া, হিজরতের রাতে হত্যার প্রয়াস,
মদিনায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর
সাহাবিদেরকে সমূলে ধ্বংস করে দেয়ার
লক্ষ্যে কোরাইশের সৈন্য-প্রস্তুতি, মদিনায় তাঁর
বিরুদ্ধে ইহুদিদের ষড়যন্ত্র, পরস্পর সম্পাদিত
চুক্তি ইহুদি কর্তৃক ভঙ্গ, রাসূলকে হত্যার জন্য
ইহুদিদের চেষ্টা ও তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্তরের
মানুষকে সংগঠিত করা।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে এবং তাঁর
সাহাবিগণ, ও পরিবার-বর্গ আহারের ক্ষেত্রেও
ধৈর্যধারণ করেছেন। এমনকি রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম কখনো একদিনে দুবেলা
যবের রুটি পেট ভরে খেতে পারেননি। এমন
হত যে, দুই তিন মাস অতিবাহিত হত, অথচ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ঘরে চুলায় আগুন জ্বলত
না। অধিকাংশ সময় তাদের খাবার থাকতো খেজুর
আর পানি।
ন্যায় পরায়ণতা:
ন্যায় পরায়ণতা এক উৎকৃষ্ট মানবীয় চরিত্র ও
অত্যবশ্যকীয় বিশেষ গুণ। রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ-গুণে গুণান্বিত ছিলেন। এ-
সম্পর্কে অনেক ঘটনাবলি বর্ণিত হয়েছে।
নীচে প্রসিদ্ধ কয়েকটি উল্লেখ করা হল।
-মাখযুমিয়্যাহ্ যখন চুরি করল, সে অভিজাত
পরিবারের সদস্য হওয়ায় কিছু সাহাবায়ে কেরামের
নিকট তার উপর হাত কর্তনের মত দণ্ড-বিধি
বাস্তবায়ন করা কঠিন মনে হল। এমনকি উসামা বিন
যায়েদ তাদের প্রতিনিধি হয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে তার ব্যাপারে
সুপারিশ করলেন। জওয়াবে রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : –
ﺃﻓﻲ ﺣﺪ ﻣﻦ ﺣﺪﻭﺩ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﺸﻔﻊ ﻳﺎ ﺃﺳﺎﻣﺔ ؟ ﻭﺍﻟﻠﻪ ﻟﻮ ﺳﺮﻗﺖ
ﻓﺎﻃﻤﺔ ﺑﻨﺖ ﻣﺤﻤﺪ ﻟﻘﻄﻌﺖ ﻳﺪﻫﺎ . ﺭﻭﺍﻩ : ﻣﺴﻠﻢ : 3196
হে উসামা ! তুমি কি আল্লাহ কর্তৃক অবধারিত দণ্ড-
বিধি মওকুফের ব্যাপারে সুপারিশ করছ ? আল্লাহর
কসম ! মুহাম্মদের মেয়ে ফাতেমাও যদি চুরি
করে অবশ্যই আমি তার হাত কেটে দেব।
-বদর প্রান্তে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
স্বীয় হস্তে বিদ্যমান লাঠি দ্বারা সৈন্যদের কাতার
সুবিন্যস্ত করেন, এ-সময়, ছাওয়াদ বিন গাজিয়াহ
কাতারের বাহিরে থাকার কারণে রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার পেটে লাঠি দ্বারা খোঁচা
মেরে বললেন : –
ﺍﺳﺘﻘﻢ ﻳﺎ ﺳﻮﺍﺩ، ﻓﻘﺎﻝ : ﻳﺎ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺃﻭﺟﻌﺘﻨﻲ، ﻭﻗﺪ ﺑﻌﺜﻚ
ﺑﺎﻟﺤﻖ ﻭﺍﻟﻌﺪﻝ ﻓﺄﻗﺪﻧﻲ – ﻳﻌﻨﻲ ﺍﺟﻌﻠﻨﻲ ﺃﻗﺘﺺ ﻣﻨﻚ –
ﻓﻜﺸﻒ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺭﺍﺿﻴﺎ، ﻭﻗﺎﻝ :
( ﺍﺳﺘﻘﺪ ﻳﺎ ﺳﻮﺍﺩ )، ﻓﺎﻋﺘﻨﻘﻪ ﺳﻮﺍﺩ ﻭﻗﺒﻞ ﺑﻄﻨﻪ، ﻓﻘﺎﻝ ﺍﻟﻨﺒﻲ
ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ : ( ﻣﺎ ﺣﻤﻠﻚ ﻋﻠﻰ ﻫﺬﺍ ﻳﺎ ﺳﻮﺍﺩ ؟ ) ﻗﺎﻝ :
ﻳﺎ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺣﻀﺮ ﻣﺎ ﺗﺮﻯ – ﻳﻌﻨﻲ ﺍﻟﻘﺘﺎﻝ – ﻓﺄﺭﺩﺕ ﺃﻥ
ﻳﻜﻮﻥ ﺁﺧﺮ ﺍﻟﻌﻬﺪ ﺑﻚ ﺃﻥ ﻳﻤﺲ ﺟﻠﺪﻱ ﺟﻠﺪﻙ، ﻓﺪﻋﺎ ﻟﻪ ﺑﺨﻴﺮ .
হে ছাওয়াদ, সোজা হয়ে দাঁড়াও। সে বলল : হে
আল্লাহর রাসূল আপনি আমাকে কষ্ট দিয়েছেন
অথচ আল্লাহ আপনাকে হক ও ইনসাফ সহকারে
প্রেরণ করেছেন। আপনি আমাকে আপনার
কাছ থেকে কিসাস্ (প্রতিশোধ) নেয়ার
সুযোগ করে দিন। এ-কথা শুনে রাসূল সাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম সন্তুষ্ট চিত্তে নিজের পেট
খুলে দিলেন এবং বললেন : হে ছাওয়াদ ! তুমি
আমার কাছ থেকে কিসাস্ নিয়ে নাও। কিন্তু ছাওয়াদ
তাঁকে জড়িয়ে ধরলেন এবং তাঁর পেটে চুমু
খেলেন। রাসূল সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বললেন : হে ছাওয়াদ তুমি এ-রকম কেন
করলে ? উত্তরে বললেন : হে আল্লাহর
রাসূল ! আপনি যা দেখছেন (যুদ্ধ) তা একেবারে
সন্নিকটে, অতএব, আমার ইচ্ছা হচ্ছে, আমার
চামড়া আপনার চামড়ার সাথে স্পর্শ হওয়া যেন
আপনার সাথে শেষ মিলন হয়। এ কথা শ্রবণে
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কল্যাণের
দোয়া করলেন।
-আব্বাস বিন আব্দুল মুত্তালিব বদর যুদ্ধে বন্দী
হয়েছিলেন। তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এর চাচা হওয়ার সুবাদে আনসারগণ বিনা
মুক্তিপণে ছেড়ে দেওয়ার আবেদন
করলেন। কিন্তু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বললেন –
ﻻ ﻭﺍﻟﻠﻪ ﻻ ﺗﺬﺭﻭﻥ ﻟﻪ ﺩﺭﻫﻤﺎً
না, তার জন্য এক দিরহামও ছাড় দিয়ো না।
এ-দ্বারা রাসূলের লক্ষ্য হচ্ছে, যাতে সবার
সাথে সমান আচরণ হয়, কোনভাবেই
স্বজনপ্রীতি প্রকাশ না পায়।
দুনিয়া বিমুখতা:
প্রয়োজনের অধিক পার্থিব বস্তু ভোগ পরিহার
করা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর
জীবনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল। একদা উমর (রা:)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট
এলেন, তখন তাঁকে খেজুর-আঁশ-ভর্তি চামড়ার
বিছানায় দেখে বললেন :-
ﺇﻥ ﻛﺴﺮﻯ ﻭﻗﻴﺼﺮ ﻳﻨﺎﻣﺎﻥ ﻋﻠﻰ ﻛﺬﺍ ﻭﻛﺬﺍ، ﻭﺃﻧﺖ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ
ﺗﻨﺎﻡ ﻋﻠﻰ ﻛﺬﺍ ﻭﻛﺬﺍ، ﻓﻘﺎﻝ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ : ( ﻣﺎ
ﻟﻲ ﻭﻟﻠﺪﻧﻴﺎ ﻳﺎ ﻋﻤﺮ، ﻭﺇﻧﻤﺎ ﺃﻧﺎ ﻓﻴﻬﺎ ﻛﺮﺍﻛﺐ ﺍﺳﺘﻈﻞ ﺑﻈﻞ ﺷﺠﺮﺓ،
ﺛﻢ ﺭﺍﺡ ﻭﺗﺮﻛﻬﺎ ) . ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺘﺮﻣﺬﻯ : 2299
কায়সার ও কিসরা (রোম ও পারস্যের সম্রাটরা)
এমন এমন(অনেক আরামদায়ক) স্থানে ঘুমায়,
অথচ আপনি আল্লাহর রাসূল, তবুও আপনি ঘুমান
এরকম বিছানায়। রাসূল সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বললেন: আমার সাথে দুনিয়ার:ভোগ-বিলাসের
সাথে কীসের সম্পর্ক ? আমি তো এখানে
পথিকের মত, যে গাছের ছায়া গ্রহণ করে,
অতঃপর তা ছেড়ে চলে যায়। তিরমিজী
রাসূল সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দোয়া করতেন
ﺍﻟﻠﻬﻢ ﺍﺟﻌﻞ ﺭﺯﻕ ﺁﻝ ﻣﺤﻤﺪ ﻗﻮﺗﺎً . ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻯ : (5979 )
হে আল্লাহ মুহাম্মদের পরিবারের জীবিকা
পরিমিত মাত্রায় দান কর।
তাঁর দুনিয়া বিমুখতার অন্যতম প্রমাণ হচ্ছে, তিনি যখন
ইহকাল ত্যাগ করেন, তখন তাঁর ঘরে কেবল
আয়েশার আলমারিতে স্বল্প পরিমাণে গম ছাড়া
কিছুই ছিল না। একটি লৌহ বর্ম ছিল ; সেটিও ত্রিশ সা
(প্রাচীন আরবে প্রচলিত পরিমাপের নির্দিষ্ট
একটি ওজন) খেজুরের বিনিময়ে এক ইহুদির
নিকট বন্দক ছিল।
লজ্জা:
লাজুকতা অন্যতম উৎকৃষ্ট গুণ, এ-গুণেও রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গুণান্বিত ছিলেন। এ-
বিষয়ে আল্লাহ তাআলা নিজেই সাক্ষী দিয়ে
বলেন:-
ﺇِﻥَّ ﺫَﻟِﻜُﻢْ ﻛَﺎﻥَ ﻳُﺆْﺫِﻱ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﻓَﻴَﺴْﺘَﺤْﻴِﻲ ﻣِﻨْﻜُﻢْ ﻭَﺍﻟﻠَّﻪُ ﻟَﺎ ﻳَﺴْﺘَﺤْﻴِﻲ
ﻣِﻦَ ﺍﻟْﺤَﻖِّ ﴿ 53 ﴾ ﺍﻷﺣﺰﺍﺏ
নিশ্চয় তোমাদের এ আচরণ নবীকে পীড়া
দেয়, সে তোমাদেরকে উঠিয়ে দিতে
সংকোচ বোধ করে, কিন্তু আল্লা¬হ সত্য
বলতে সংকোচ বোধ করেন না। (সূরা আহযাব
৫৩)
বিশিষ্ট সাহাবি আবু সাঈদ খুদরী রা. বলেন:
ﻛﺎﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺃﺷﺪّ ﺣﻴﺎﺀً ﻣﻦ ﺍﻟﺒﻜﺮ ﻓﻲ
ﺧﺪﺭﻫﺎ، ﻭﻛﺎﻥ ﺇﺫﺍ ﻛﺮﻩ ﺷﻴﺌﺎً ﻋﺮﻓﻨﺎﻩ ﻓﻲ ﻭﺟﻬﻪ . ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻯ :
5637
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পরদায়
অবস্থানকারী কুমারী মেয়ের চেয়েও
অধিক লাজুক ছিলেন। তিনি যখন কোন কাজ
অপছন্দ করতেন তাঁর চেহারায় আমরা তা চিনতে
পারতাম।
উত্তম সঙ্গ:
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সহচরদের
সাথে উত্তম ও সুন্দরভাবে মেলামেশা
করতেন। আলী রা. বলেন : –
ﻛﺎﻥ ﺍﻟﺮﺳﻮﻝ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺃﻭﺳﻊ ﺍﻟﻨﺎﺱ ﺻﺪﺭﺍ،
ﻭﺃﺻﺪﻕ ﺍﻟﻨﺎﺱ ﻟﻬﺠﺔ، ﻭﺃﻛﺮﻣﻬﻢ ﻋﺸﺮﺓ . ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺘﺮﻣﺬﻯ 3571:
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন
সর্বাপেক্ষা প্রশস্ত হৃদয়ের অধিকারী,
সর্বাপেক্ষা সত্যভাষী, সর্বাপেক্ষা সম্মান
জনক লেনদেনকারী।
ইবনে আবু হারাহ বলেন :—
ﻛﺎﻥ ﺩﺍﺋﻢ ﺍﻟﺒﺸﺮ، ﺳﻬﻞ ﺍﻟﺨﻠﻖ، ﻟﻴﻦ ﺍﻟﺠﺎﻧﺐ، ﻟﻴﺲ ﺑﻔﻆ ﻭﻻ
ﻏﻠﻴﻆ ﻭﻻﺳﺨﺎﺏ ﻭﻻ ﻓﺤﺎﺵ ﻭﻻ ﻋﻴﺎﺏ ﻭﻻ ﻣﺪﺍﺡ، ﻳﺘﻐﺎﻓﻞ ﻋﻤﺎ
ﻻ ﻳﺸﺘﻬﻲ ﻭﻻ ﻳﺆﻳﺲ ﻣﻨﻪ، ﻭﻛﺎﻥ ﻳﺠﻴﺐ ﻣﻦ ﺩﻋﺎﻩ، ﻭﻳﻘﺒﻞ
ﺍﻟﻬﺪﻳﺔ ﻣﻤﻦ ﺃﻫﺪﺍﻩ، ﻭﻟﻮ ﻛﺎﻧﺖ ﻛﺮﺍﻉ ﺷﺎﺓ، ﻭﻳﻜﺎﻓﺊ ﻋﻠﻴﻬﺎ، ﻭﻛﺎﻥ
ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺇﺫﺍ ﺩﻋﺎﻩ ﺃﺣﺪ ﻣﻦ ﺃﺻﺤﺎﺑﻪ ﻭﺃﻫﻞ ﺑﻴﺘﻪ
ﻗﺎﻝ : ﻟﺒﻴﻚ، ﻭﻛﺎﻥ ﻳﻤﺎﺯﺡ ﺃﺻﺤﺎﺑﻪ ﻭﻳﺤﺎﺩﺛﻬﻢ ﻭﻳﺪﺍﻋﺐ
ﺻﺒﻴﺎﻧﻬﻢ، ﻭﻳﺠﻠﺴﻬﻢ ﻓﻲ ﺣﺠﺮﻩ، ﻭﻳﻌﻮﺩ ﺍﻟﻤﺮﺿﻰ ﻓﻲ ﺃﻗﺼﻰ
ﺍﻟﻤﺪﻳﻨﺔ ﻭﻳﻘﺒﻞ ﻋﺬﺭ ﺍﻟﻤﻌﺘﺬﺭ، ﻭﻳﻜﻨﻲ ﺃﺻﺤﺎﺑﻪ، ﻭﻳﺪﻋﻮﻫﻢ
ﺑﺄﺣﺐ ﺍﻷﺳﻤﺎﺀ ﺇﻟﻴﻬﻢ ﺗﻜﺮﻳﻤﺎً ﻟﻬﻢ، ﻭﻻ ﻳﻘﻄﻊ ﻋﻠﻰ ﺃﺣﺪ ﺣﺪﻳﺜﻪ
ﺣﺘﻰ ﻳﺘﺠﻮﺯ .
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন সদা
প্রফুল্লচিত্ত, কোমল চরিত্রের অধিকারী,
সরল হৃদয়বান। রূঢ় স্বভাবেন ছিলেন না, নির্দয়
প্রকৃতির ও ছিলেন না, নির্লজ্জ, গিবতকারী ও
বিদ্রূপকারী ছিলেন না। অতিরিক্ত
গুণকীর্তনকারীও ছিলেন না, মনে চায় না-এমন
বস্তু থেকে বিমুখ থাকতেন, কিন্তু কাউকে তা
থেকে নিরাশ করতেন না। কেউ ডাকলে সাড়া
দিতেন, কেউ উপহার দিলে গ্রহণ করতেন,
যদিও তা ছাগলের খুর হত, এবং তার উত্তম প্রতিদান
দিতেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে
যখন কোন সাহাবি বা পরিবারের কোন সদস্য
ডাকতেন তিনি লাব্বাইক বলে সাড়া দিতেন। তিনি
সাহাবাদের সাথে রসিকতা করতেন। গল্প
করতেন তাদের সাথে। তাদের সন্তানদের
সাথে খেলা করতেন এবং নিজের কোলে
বসাতেন। মদিনার দূর প্রান্তে বসবাসকারী কেউ
অসুস্থ হলে তারও খোঁজখবর নিতেন।
আবেদনকারীর আবেদন গ্রহণ করতেন।
সাহাবাদেরকে উপনামে ডাকতেন। তিনি তাদের
সম্মান করে তাদের প্রিয় নাম দ্বারা ডাকতেন।
সীমা-লঙ্ঘন না করলে কাউকে কথা বলা
থেকে বারণ করতেন না।
বিনয়
বিনয় উঁচু মাপের চারিত্রিক গুণ। এ-গুণের
ক্ষেত্রে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
ছিলেন সর্বোচ্চ উদাহরণ। রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের কাপড় নিজে সেলাই
করতেন। নিজ হাতে ছাগলের দুগ্ধ দোহন
করতেন। নিজের জুতা নিজে সেলাই করতেন।
নিজের সেবা নিজে করতেন, নিজের ঘর
নিজে পরিষ্কার করতেন। নিজের উট নিজে
বাঁধতেন। নিজের উটকে নিজে ঘাস ভক্ষণ
করাতেন। গোলামের সাথে খেতেন,
প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র নিজে বহন করে
বাজারে নিতেন। একদা এক লোক রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আসল,
কিন্তু সে তাঁর ভয়ে শিহরিত হল, তিনি তাকে
বললেন :—
ﻫﻮﻥ ﻋﻠﻰ ﻧﻔﺴﻚ، ﻓﺈﻧﻲ ﻟﺴﺖ ﻣﻠﻜﺎً، ﻭﺇﻧﻤﺎ ﺃﻧﺎ ﺍﺑﻦ ﺍﻣﺮﺃﺓ ﻣﻦ
ﻗﺮﻳﺶ ﺗﺄﻛﻞ ﺍﻟﻘﺪﻳﺪ . ﺭﻭﺍﻩ ﺍﺑﻦ ﻣﺎﺟﺔ : 330
তুমি নিজকে হালকা (স্বাভাবিক) করে নাও, কেননা
আমি রাজা বাদশা নই। নিশ্চয় আমি কোরাইশের
এমন এক মহিলার সন্তান, যে শুকনো গোশত
খায়।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অত্যধিক প্রশংসা
থেকে বারণ করে বলেছেন : –
ﻻ ﺗﻄﺮﻭﻧﻲ ﻛﻤﺎ ﺃﻃﺮﺕ ﺍﻟﻨﺼﺎﺭﻯ ﺍﺑﻦ ﻣﺮﻳﻢ، ﻭﺇﻧﻤﺎ ﺃﻧﺎ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ،
ﻓﻘﻮﻟﻮﺍ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺭﺳﻮﻟﻪ . ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻯ : 3189
তোমরা আমার অত্যধিক প্রশংসা করো না, যে-
রকম খ্রিস্টানরা মরিয়ম তনয়ের ক্ষেত্রে
করেছে। নিশ্চয় আমি আল্লাহর বান্দা। অতএব
তোমরা (আমাকে) বল-আল্লাহর বান্দা ও তাঁর
রাসূল।
সাহাবিদেরকে তাঁর সম্মানার্থে দাঁড়ানো
থেকে বারণ করে বলেছেন : –
ﺇﻧﻤﺎ ﺃﻧﺎ ﻋﺒﺪ، ﺁﻛﻞ ﻛﻤﺎ ﻳﺄﻛﻞ ﺍﻟﻌﺒﺪ، ﻭﺃﺟﻠﺲ ﻛﻤﺎ ﻳﺠﻠﺲ ﺍﻟﻌﺒﺪ .
নিশ্চয় আমি আল্লাহর গোলাম। আমি খাদ্য গ্রহণ
করি, যে রকম গোলাম খাদ্য গ্রহণ করে। আমি
উপবেশন করি, যে রকম গোলাম উপবেশন
করে।
দয়া
দয়া আল্লাহ তাআলা প্রদত্ত রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর এক বিশেষ গুণ। আল্লাহ
তাআলা বলেন :—
ﻟَﻘَﺪْ ﺟَﺎﺀَﻛُﻢْ ﺭَﺳُﻮﻝٌ ﻣِﻦْ ﺃَﻧْﻔُﺴِﻜُﻢْ ﻋَﺰِﻳﺰٌ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻣَﺎ ﻋَﻨِﺘُّﻢْ ﺣَﺮِﻳﺺٌ
ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢْ ﺑِﺎﻟْﻤُﺆْﻣِﻨِﻴﻦَ ﺭَﺀُﻭﻑٌ ﺭَﺣِﻴﻢٌ ﴿ 128 ﴾ﺍﻟﺘﻮﺑﺔ
নিশ্চয় তোমাদের মধ্যে হতে তোমাদের
নিকট এক রাসূল এসেছেন, তোমাদেরকে যা
বিপন্ন করে, তা তাঁর জন্য কষ্টদায়ক। সে
তোমাদের মঙ্গলকামী, মোমিনদের প্রতি
সে দয়ার্দ্র ও পরম দয়ালু। (সূরা তাওবা ১২৮ )
তিনি আরো বলেন :—
ﻭَﻣَﺎ ﺃَﺭْﺳَﻠْﻨَﺎﻙَ ﺇِﻟَّﺎ ﺭَﺣْﻤَﺔً ﻟِﻠْﻌَﺎﻟَﻤِﻴﻦَ ﴿ 107 ﴾ ﺍﻷﻧﺒﻴﺎﺀ
আমি তোমাকে বিশ্বজগতের প্রতি রহমত
রূপে প্রেরণ করেছি।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কতক উক্তি
থেকেও তা প্রমাণিত হয়। (সূরা আম্বিয়া: ১০৭)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :—
ﻣﻦ ﻻ ﻳﺮﺣﻢ ﻻ ﻳﺮﺣﻢ . ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻯ : 5537
যে দয়া করে না, তার প্রতি দয়া করা হয় না।
ﺍﻟﺮﺍﺣﻤﻮﻥ ﻳﺮﺣﻤﻬﻢ ﺍﻟﻠﻪ— ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺘﺮﻣﺬﻯ : 8471
দয়াশীলদেরকে আল্লাহ দয়া করেন।
ﻓﻲ ﻛﻞ ﺫﺍﺕ ﻛﺒﺪ ﺭﻃﺒﺔ ﺃﺟﺮ . ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻯ : 2282
প্রত্যেক প্রাণীর সেবায় রয়েছে পুণ্যের
ছোঁয়া।
ﻟﻮﻻ ﺃﻥ ﺃﺷﻖ ﻋﻠﻰ ﺃﻣﺘﻲ ﻷﻣﺮﺗﻬﻢ ﺑﺎﻟﺴﻮﺍﻙ ﻣﻊ ﻛﻞ ﺻﻼﺓ . ﺭﻭﺍﻩ
ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻯ : 1447
প্রত্যেক নামাজের সময় মিসওয়াক করা যদি আমার
উম্মতের উপর পীড়াদায়ক না হত তবে তা
বাধ্যতামূলক করে দিতাম।
বিশ্বস্ততা
বিশ্বস্ততা ছিল রাসূলের অন্যতম গুণ, নীচে
রাসূলের বিশ্বস্ততার নমুনা উল্লেখ করা হল।
-যেমন খাদিজা রা. এর সাথে রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সত্য-নিষ্ঠ আচরণ :
আয়েশা রা. বর্ণনা করে বলেন :—
ﻣﺎ ﻏﺮﺕ ﻣﻦ ﺍﻣﺮﺃﺓ ﻣﺎ ﻏﺮﺕ ﻣﻦ ﺧﺪﻳﺠﺔ، ﻟﻤﺎ ﻛﻨﺖ ﺃﺳﻤﻌﻪ
ﻳﺬﻛﺮﻫﺎ، ﻭﺇﻥ ﻛﺎﻥ ﻟﻴﺬﺑﺢ ﺷﺎﺓ ﻓﻴﻬﺪﻳﻬﺎ ﺇﻟﻰ ﺧﻼﺋﻠﻬﺎ، ﻭﺍﺳﺘﺄﺫﻧﺖ
ﻋﻠﻴﻪ ﺃﺧﺘﻬﺎ ﻓﺎﺭﺗﺎﺡ ﺇﻟﻴﻬﺎ، ﻭﺩﺧﻠﺖ ﻋﻠﻴﻪ ﺍﻣﺮﺃﺓ ﻓﻬﺶ ﻟﻬﺎ
ﻭﺃﺣﺴﻦ ﺍﻟﺴﺆﺍﻝ ﻋﻨﻬﺎ، ﻓﻠﻤﺎ ﺧﺮﺟﺖ، ﻗﺎﻝ : ﺇﻧﻬﺎ ﻛﺎﻧﺖ ﺗﺄﺗﻴﻨﺎ ﺃﻳﺎﻡ
ﺧﺪﻳﺠﺔ ، ﻭﺇﻥ ﺣﺴﻦ ﺍﻟﻌﻬﺪ ﻣﻦ ﺍﻹﻳﻤﺎﻥ .
“আমি কোন মহিলার ব্যাপারে ঈর্ষা করতাম না, যা
খাদিজার ব্যাপারে করতাম। কেননা রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামকে তাঁর কথা স্মরণ করতে
শুনতাম। এমনকি তিনি কোন ছাগল জবাই করলে
তাঁর বান্ধবীদের নিকট তা থেকে হাদিয়া
প্রেরণ করতেন। একদা তাঁর বোন রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ঘরে
প্রবেশের অনুমতি চাইলে তিনি তাঁকে অনুমতি
দিলেন এবং স্বস্তি বোধ করলেন। অন্য
একজন মহিলা প্রবেশ করলে রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম উৎফুল্ল হলেন, সুন্দরভাবে
তার খোঁজখবর নিলেন। যখন তিনি বের হয়ে
গেলেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বললেন-এ মহিলা খাদিজার জীবদ্দশায় আমার
কাছে আসতো। নিশ্চয় সু-সম্পর্ক রক্ষা
ঈমানের পরিচায়ক ।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কতিপয়
চারিত্রিক গুণাবলি ও শিষ্টাচার
১) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দৃষ্টি অবনত
রাখতেন। কোন জিনিসের প্রতি পুনরায় দৃষ্টি
দিতেন না, স্থির দৃষ্টিতেও তাকাতেন না।
আকাশের চেয়ে জমির দিকে বেশি
তাকাতেন।
২) সাহাবাদের সঙ্গে হাঁটার সময় তাদেরকে
আগে দিতেন। তিনি তাদের আগে বাড়তেন না।
কারো সাথে দেখা হলে সালাম দিতেন।
৩) তাঁর কথা ছিল সংক্ষিপ্ত, অথচ ব্যাপক
অর্থবোধক ও সুস্পষ্ট। প্রয়োজন অনুসারে
কথা বলতেন-বেশিও বলতেন না কমও বলতেন
না। রাসূলের সব কথা ছিল ভাল ও কল্যাণধর্মী।
কিন্তু তিনি দীর্ঘ নীরবতা অবলম্বনকারী
ছিলেন ।
৪) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন
সর্বাধিক কোরআন তেলাওয়াতকারী,
এস্তেগফার ও জিকিরকারী এবং প্রার্থনাকারী।
সারাটি জীবন সত্যের আহ্বানে ও সৎকাজে
ব্যয় করেছেন। তিনি ইসলামের আগে ও পরে
অর্থাৎ সদা সত্যবাদী ও আমানতদার ছিলেন।
৫) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন
বুদ্ধিমান, গাম্ভীর্যপূর্ণ, ও সঠিক সিদ্ধান্তের
অধিকারী, প্রজ্ঞাময় মহান নেতা, ক্রোধ
সংবরণকারী, নম্র। সব কিছুতে নম্রতা পছন্দ
করতেন, এবং বলতেন:
ﻣﻦ ﺣﺮﻡ ﺍﻟﺮﻓﻖ ﻳﺤﺮﻡ ﺍﻟﺨﻴﺮ . ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ : (4696 )
যে নম্রতা থেকে বঞ্চিত, সে কল্যাণ
থেকে বঞ্চিত।”
৬) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন সদা
চিন্তাশীল, কোমল, শান্ত ও ভদ্র চরিত্রের
অধিকারী, রূঢ় স্বভাবের ও হীন চরিত্রের
অধিকারী ছিলেন না। নিয়ামত কম হলেও বেশি
মনে করতেন। ব্যক্তিগত বা পার্থিব স্বার্থে
আঘাত হলে রাগ করতেন না। আল্লাহর বিধান
লঙ্ঘিত হলে প্রতিবিধান না করা পর্যন্ত ক্রোধ
থামতেন না এবং ক্ষান্ত হতেন না।
৭) হাসির সময় প্রায় মুচকি হাসতেন। এক কথা তিন
বার বলতেন। তিন বার সালাম দিতেন। তিন বার
অনুমতি চাইতেন। যাতে তার কথা ও কর্ম, আচার-
আচরণ সহজে বোধগম্য হয়, অনায়াসে
মানুষের হৃদয়ে আসন করে নেয়।
নবী অাকরাম সাল্লাল্লাহু অালাইহি ওয়া সাল্লাম এর চরিত্র ও গুনাবলী :পর্ব- ২
byMd Mokbular Rahman
-
0