কামনা করা অনেক বড়
গুণ। ইসলাম
কল্যাণকামিতাকে
দ্বীন হিসেবে উল্লেখ
করেছে। সুস্থ-
বিবেকসম্পন্ন
মানুষমাত্রই সাধারণত
নিজের জীবনের
যেকোনো বিষয়ে
কল্যাণকামী। এটি মন্দ
বা নিন্দনীয় কিছু নয়
বরং সুন্দর
চিন্তাচেতনার
পরিচায়ক এবং
প্রশংসনীয়। অবশ্য,
এটি আরও
সৌন্দর্যমণ্ডিত ও সুখকর
হয়, যখন কেউ নিজের
কল্যাণকামিতার
পাশাপাশি অন্যের
কল্যাণকামী হয়।
নিজের পছন্দের
বিষয়কে অন্যের জন্য
পছন্দ করে। নিজের
অপ্রিয় বস্তুকে অন্যের
জন্য অপ্রিয় জ্ঞান
করে। নিজের জন্য যা
কল্যাণকর ও পছন্দের
মনে হবে এবং যা
অপছন্দের ও অকল্যাণকর
মনে হবে, অন্যের
বেলায় ঠিক সেভাবেই
মনে করা ইসলামের
শিক্ষা ও আদর্শ।
কল্যাণকামিতার
প্রতি উদ্বুদ্ধদ করে
হাদিস শরিফে বলা
হয়েছে- ‘দ্বীন হচ্ছে
কল্যাণকামিতা।’
ইসলাম সম্প্রীতি,
সহানুভূতি ও প্রেম-
মমতার ধর্ম। মুমিনদের
পারস্পরিক
সহযোগিতার
মাপকাঠি হচ্ছে-
‘কল্যাণকামিতা।’ তবে
তা হবে সৎকাজে এবং
আল্লাহর ভয়ের
ভিত্তিতে। আবার
পাপ, সীমালঙ্ঘন ও
শত্রুতার কাজে
সহযোগিতা করা
থেকে বেঁচে থাকবে।
কারণ, এসব কাজে
সহযোগিতা করা মানে
অকল্যাণকামিতা ও
ক্ষতি সাধন করা।
দেখুন, পারস্পরিক
সহযোগিতা করা, না
করার ব্যাপারে
ইসলামের দর্শন, লক্ষ্য
এক ও অভিন্ন। তা হচ্ছে-
সৎকাজ এবং আল্লাহর
ভয়ের ভিত্তিতে
কল্যাণকামিতা।
সন্দেহ নেই,
নিঃস্বার্থ
কল্যাণকামী মানুষরা
সুন্দর মন ও মননের
অধিকারী। এরা অন্যের
কল্যাণ বা উপকার
সাধন করতে পারলে
আত্মতৃপ্তি লাভ করেন।
অপরের মঙ্গল, উন্নতি
দেখলে আনন্দিত হন,
খুশিতে মেতে ওঠেন।
অকৃত্রিম-নির্মল
হাসিরেখা তাদের
চেহারাকে আরও
মায়াবী ও আলোকময়
করে তোলে।
অপরদিকে সঙ্কীর্ণমনা
লোকেরাই অন্যের
অকল্যাণকামী হয়ে
থাকেন, ক্ষতিসাধনে
ব্রত হন। নোংরা
চিন্তাচেতনা লালন
করেন। মানুষে মানুষে
ঝগড়া-বিবাদ হোক,
সমাজে ফেতনা-
ফাসাদ লেগে থাকুক
এবং বিস্তৃত হোক
তাদের নিত্য কামনা।
কৃত্রিমভাবে সাধু
সাজা আর মিষ্টি
কথার বুলি আওড়ানো
তাদের পেশা।
অনাচার-
স্বার্থান্বেষণ তাদের
নেশা। কারো ভালো
কিছু তাদের সহ্য হয় না,
বরং তারা মনে মনে
ভীষণ পীড়ায় ভোগেন।
এটি প্রমাণ করে,
তাদের মলিন বীভৎস
চেহারা, যা
কোনোভাবেই ঢেকে
রাখা যায় না।
বলাবাহুল্য, নিজের
মঙ্গল-উন্নতি কামনার
মতোই কিছু মানুষের
স্বভাবজাত গুণ হচ্ছে,
অন্যের ক্ষতিসাধন বা
উন্নতি সইতে না
পারা, ছিদ্রান্বেষণ,
পরচর্চা, মিথ্যাচার,
অমঙ্গল কামনা,
লিপ্সা ইত্যাদি।
এগুলো চরম ঘৃণ্য ও
পরিত্যাজ্য। এগুলো
কোনো সৎ ও সুন্দর
মনের মানুষের গুণ বা
বৈশিষ্ট্য নয়। ইসলাম
এগুলোকে প্রকৃত মুমিন
হওয়ার প্রতিবন্ধক
সাব্যস্ত করেছে।
তাই আমাদের উচিত,
অন্যের উন্নতিতে তার
সহযোগী হওয়া,
প্রতিহিংসা পরায়ণ
না হওয়া। অপরের
দুঃখে দুঃখিত হওয়া,
অন্যের দুঃখ দেখে
উল্লাসিত না হওয়া।