তাওবাহ মানে ফিরে আসা। যে কোন খারাপ কাজ – অন্যায়, অবিচার, গুনাহ, পাপচার ও আল্লাহর নাফরমানি হতে একনিষ্ঠ ক্ষমা চেয়ে নিয়ে নেক কাজের মাধ্যমে আপন রবের দিকে ফিরে আসাই তাওবাহ।
অনেকে হয়তো মনে করে, শুধুমাত্র খারাপ কাজ বা গুনাহের কাজ থেকে ক্ষমা চাওয়া বা তা থেকে ফিরে আসার নামই তাওবাহ। কিন্তু তাদের এ ধরনের ধারণা মোটেও ঠিক নয়। বরং, এ ক্ষেত্রে সঠিক, ও গ্রহণযোগ্য কথা হল, যে সব নেক আমল করতে আল্লাহ আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন তা ছেড়ে দেয়া বা তার প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শনও বড় গুনাহ ও অন্যায়।
যারা এ সব নেক আমলগুলো পালন করা ছেড়ে দেয় তাদের জন্য অবশ্যই তা ছেড়ে দেয়া হতে তাওবাহ করা এবং আল্লাহর আদেশের দিকে ফিরে আসা, নিষিদ্ধ কাজ করার অপরাধ থেকে তাওবাহ করার চেয়ে আরও অধিক গুরুত্বপুর্ণ।
অধিকাংশ মানুষ আল্লাহর অনেক আদেশ, অন্তরের কার্যাদি, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের আমল বা যিকির ছেড়ে দেয়, অথচ তারা জানেই না যে এগুলো সবই আল্লাহর আদেশের অন্তর্ভুক্ত এবং এ গুলো ছেড়ে দেয়া বা এ সব আমল পালন করা হতে বিরত থাকাও অন্যায়।
মোট কথা, তাওবাহ বান্দার জীবনের শেষ ও শুরু। তবে তার প্রয়োজন যেমনিভাবে জীবনের শেষাংশে জরুরী, অনুরূপভাবে জীবনের প্রথমাংশেও জরুরী। যেমন আল্লাহ তাআলা বলেন-
ﻭَﺗُﻮﺑُﻮﺍ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺟَﻤِﻴﻌًﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟْﻤُﺆْﻣِﻨُﻮﻥَ ﻟَﻌَﻠَّﻜُﻢْ ﺗُﻔْﻠِﺤُﻮﻥَ
“হে ঈমাদারগণ তোমরা সকলে আল্লাহর নিকট তাওবাহ করো, যাতে তোমরা সফলকাম হও”। -সূরা নূর:৩১
উল্লেখিত আয়াতটি মদীনায় অবতীর্ণ হয়েছে। এ আয়াতে আল্লাহ তাআলা শুধু ঈমানদার নয় বরং তখনকার সময়ের সর্বোত্তম মানব ছিলেন, যারা জিহাদ, সবর, হিজরতসহ যাবতীয় নেক কাজের জন্য কিয়ামত পর্যন্ত ইতিহাস হয়ে থাকবেন, সেই পুন্যাত্মা সাহাবীদেরকেও তাওবাহ করার নির্দেশ দিয়েছেন এবং এরপর তিনি তাওবাহ করাকে সফলতা ও কামিয়াবী লাভের কারণ নির্ধারণ করেছেন।
সুতরাং, কামিয়াবী বা সফলতা পাওয়ার একমাত্র উপায় হল আল্লাহর নিকট যাবতীয় গুনাহ ভুলত্রুটি হতে একনিষ্ঠ তাওবাহ করা। এ ছাড়া কোন ঈমানদারই সফল হতে পারে না। রাব্বুল আলামিন আমাদেরকে বেশি বেশি তাওবাহ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
Tags
ধর্ম ও জীবন