আল্লাহ তাআলার নৈকট্য অর্জনের মাধ্যম হলো তাঁকে ভয়
করা। যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলা যতবেশি ভয় করে সে
ব্যক্তিই মানুষের মধ্যে সবচেয়ে সম্মানিত। এ কারণেই
আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমে বিভিন্ন জায়গায় আল্লাহ
তাআলাকে ভয় করার কথা বলেছেন।
আল্লাহ তাআলার ভয় মানুষকে দুনিয়া সব ধরনের অন্যায় কাজ
থেকে বিরত রাখে। মানুষের মনে যখন আল্লাহর ভয়
থাকে তখন ওই ব্যক্তির দ্বারা সমাজে কোনো অন্যায় কাজ
সংঘটিত হতে পারে না।
আল্লাহ তাআলা মানুষের উদ্দেশ্যে ঘোষণা করেন, ‘হে
ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহ তাআলাকে এমন ভাবে ভয় কর;
যেভাবে তাকে ভয় করার উচিত (অর্থাৎ ভয় করার মতো ভয়
কর) এবং মুসলমান না হয়ে মৃত্যু বরণ কর না। (সুরা আল-ইমরান :
আয়াত ১০২)
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মানুষকে মানবতার
সার্বিক কল্যাণে আল্লাহ তাআলাকে ভয় করতে নির্দেশ
প্রদান করেছেন। পাশাপাশি অন্যায় কাজ পরিত্যাগ করে
কল্যাণের কাজে ব্রতী হওয়ারও নির্দেশ প্রদান
করেছেন।
হজরত আবু যর জুনদুব ইবনে জুনাদাহ এবং হজরত আবু আবদুর
রহমান মুয়াজ ইবনে জাবাল রাদিয়াল্লাহু আনহুমা তাঁরা উভয়ে
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা
করেছেন, তিনি বলেছেন, ‘আল্লাহকে ভয় কর
যেখানেই থাক না কেন। অন্যায় কাজ হয়ে গেলে
পরক্ষণেই ভাল কাজ কর। তবে ভাল কাজ অন্যায়কে মুছে
দিবে আর মানুষের সঙ্গে ভাল ব্যবহার কর। (মুসনাদে
আহমদ ও তিরমিজি)
হাদিসের শিক্ষা
মানুষ যেখানেই থাকুক না কেন, আল্লাহ তাআলাকে ভয় করার
মতো ভয় করা;
আল্লাহ তাআলার ভয় মানুষকে দুনিয়া ও পরকালে সম্মানিত
করে তোলে;
ছোট হোক আর বড় হোকে কোনো ভাবেই অন্যায়
কাজ করা যাবে না;
মাত্রাতিরিক্ত অন্যায়ের কারণেই দুনিয়াতে মানুষ ঝড়-তুফান,
ভূমিকম্প, জলোচ্ছ্বাস, সমুদ্রের নিম্নচাপসহ নানা ধরণের
প্রাকৃতিক দুর্যোগে পতিত হয়।
কোনোভাবে অন্যায় কাজ হয়ে গেলে, সঙ্গে
সঙ্গে ভাল কাজ করা;
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ঘোষণা অনুযায়ী
ভাল কাজ অন্যায় তথা গোনাহকে মুছে দিবে।
বিশেষ করে
এ হাদিসের শেষাংশে মানুষের প্রতি ভালো ব্যবহারের
নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। আর এ নির্দেশ আল্লাহ
তাআলাও প্রদান করছেন, ‘আর তোমরা আল্লাহ ছাড়া আর
কারও উপাসনা করবে না; পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন, ইয়াতিম ও
দীন-দরিদ্রদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করবে; মানুষের
সঙ্গে উত্তম কথা বলবে।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ৮৩)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআন ও হাদিসের নির্দেশ
অনুযায়ী তাকে ভয় করার তাওফিক দান করুন। অন্যায় কাজ
ছেড়ে দিয়ে ভাল করার করার তাওফিক দান করুন। সর্বোপরি
মানুষের সঙ্গে উত্তম ব্যবহার ও ভালো কথা বলার তাওফিক
দান করুন। আমিন।