হাদিসের বর্ণনায় অজুর পাঁচ উপকার


মহান আল্লাহ মানুষকে পৃথিবীতে পূতঃপবিত্র জীবনযাপনের নির্দেশ দিয়েছেন। শুধু বাহ্যিক পবিত্রতা নয়, বরং আত্মিক পবিত্রতা অর্জনেরও নির্দেশ দিয়েছেন। কেননা আল্লাহর মহান সত্তা সব ধরনের দোষ-ত্রুটি, অপবিত্রতা ও পঙ্কিলতা মুক্ত। বাহ্যিক ও আত্মিক পবিত্রতা অর্জনের অন্যতম মাধ্যম অজু।

নিম্নে অজুর পাঁচ আত্মিক উপকারিতা তুলে ধরা হলো।

১. পাপমুক্তি : আল্লাহ অজুর মাধ্যমে বান্দাকে পাপমুক্ত করেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আমি কি তোমাদের এমন কাজ জানাব না, যা করলে আল্লাহ (বান্দার) পাপগুলো দূর করে দেন এবং মর্যাদা বৃদ্ধি করেন? লোকেরা বলল, হে আল্লাহর রাসুল, আপনি বলুন। তিনি বললেন, অসুবিধা ও কষ্ট সত্ত্বেও পরিপূর্ণরূপে অজু করা, মসজিদে আসার জন্য বেশি পদচারণ করা এবং এক সালাতের পর আর এক সালাতের জন্য প্রতীক্ষা করা; আর এ কাজগুলো হলো সীমান্ত প্রহরার স্বরূপ।

(সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৪৭৫)

২. পাপের প্রভাব দূর : অজু শুধু মানুষের পাপগুলো দূর করে না; বরং দেহ-মন থেকে পাপের প্রভাব ও গ্লানি দূর করে দেয়। মহানবী (সা.) বলেন, ‘কোনো মুসলিম কিংবা মুমিন বান্দা অজুর সময় যখন মুখমণ্ডল ধুয়ে ফেলে তখন তার চোখ দিয়ে অর্জিত গুনাহ পানির সঙ্গে বা পানির শেষ বিন্দুর সঙ্গে বের হয়ে যায়। যখন সে দুই হাত ধৌত করে তখন তার দুই হাতের স্পর্শের মাধ্যমে সব গুনাহ পানির অথবা পানির শেষ বিন্দুর সঙ্গে ঝরে যায়। অতঃপর যখন সে দুই পা  ধৌত করে, তখন তার দুই পা দিয়ে হাঁটার মাধ্যমে অর্জিত সব গুনাহ পানির সঙ্গে অথবা পানির শেষ বিন্দুর সঙ্গে ঝরে যায়, এমনকি সে যাবতীয় গুনাহ থেকে মুক্ত ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে যায়।

(সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৪৬৫)

৩. অন্তরে আলো লাভ : অজুর মাধ্যমে মানুষের অন্তরে নুর বা জ্যোতি সৃষ্টি হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে স্থান পর্যন্ত অজুর পানি পৌঁছবে সে স্থান পর্যন্ত মুমিন ব্যক্তির ঔজ্জ্বল্য বা সৌন্দর্য পৌঁছবে।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৪৭৪)

হাদিসবিশারদরা বলেন, হাদিসে ঔজ্জ্বল্য দ্বারা প্রধানত অন্তরের নুর উদ্দেশ্য।

৪. শয়তানের প্রভাব থেকে মুক্তি : আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যখন ঘুমিয়ে পড়ে তখন শয়তান তার ঘাড়ের পশ্চাদংশে তিনটি গিঠ দেয়। প্রতি গিঠে সে এ বলে চাপড়ায়, তোমার সামনে রয়েছে দীর্ঘ রাত, অতএব তুমি শুয়ে থাকো।

অতঃপর সে যদি জাগ্রত হয়ে আল্লাহকে স্মরণ করে একটি গিঠ খুলে যায়, অজু করলে আর একটি গিঠ খুলে যায়, অতঃপর নামাজ আদায় করলে আর একটি গিঠ খুলে যায়। তখন তার প্রভাত হয়, উত্ফুল্ল মনে ও অনাবিল চিত্তে। অন্যথায় সে সকালে উঠে কলুষ কালিমা ও আলস্য সহকারে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১১৪২)
সুত্র: কালেরকন্ঠ
প্রকাশ:২৮/০২/২০২৩

৫. ঈমানের পূর্ণতা লাভ : অজুর মাধ্যমে বান্দার ঈমান পূর্ণতা লাভ করে। কেননা রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘পবিত্রতা ঈমানের অর্ধেক।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৪২২)

Post a Comment

Please Select Embedded Mode To Show The Comment System.*

Previous Post Next Post