বাথরুম বা টয়লেট নাপাক ও নোংরা স্থান। তাই এখানে অবস্থান করা অবস্থায় মহান আল্লাহর প্রতি সম্মানের বিষয়টি স্মরণ রাখতে হবে।
সুতরাং সেখানে মুখে উচ্চারণ করে আল্লাহর জিকির, দোয়া, তাসবিহ, তিলাওয়াত ইত্যাদি সমীচীন নয়। এমনকি খোলা স্থানে পেশাব-পায়খানারত অবস্থায়ও এমনটি করা মহান আল্লাহর শান ও মর্যাদার পরিপন্থী। তাই টয়লেট বা গোসলখানায় সালাত আদায় করাও বৈধ নয়। যেমন—হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, আবু সাঈদ খুদরি (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘পৃথিবীর সর্বত্র সালাত আদায় করা যাবে—গোরস্তান ও বাথরুম ছাড়া। ’ [ইবনে তাইমিয়া (রহ.) বলেন, হাদিসটির সনদ জাইয়েদ (ভালো), ইকতিযাউস সিরাতুল মুস্তাকিম, পৃষ্ঠা ৩৩২ এবং শাইখ আলবানি (রহ.) হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন, আল ইরওয়া : ১/৩২০]
সুতরাং মুসলিম ব্যক্তির করণীয় হলো, টয়লেটে প্রবেশের আগে টয়লেটে প্রবেশের দোয়া পাঠ করা এবং প্রবেশের পর চুপ থাকা। তবে সেখানে মনে মনে কোনো বিষয় চিন্তাভাবনা করা, দ্বিনি বিষয়, দোয়া-তাসবিহ ইত্যাদি স্মরণ করলে তাতে কোনো অসুবিধা নেই। প্রখ্যাত তাবেঈ ইকরিমা (রহ.) বলেন, টয়লেটে থাকা অবস্থায় মুখে উচ্চারণ করে জিকির করবে না, তবে মনে মনে করতে পারে। ’ (আল আওসাত : ১/৩৪১)
তদ্রুপ টয়লেটের বেসিনে অজু করার প্রয়োজন হলে মনে মনে ‘বিসমিল্লাহ’ পড়াই যথেষ্ট।
সশব্দে পড়া অনুচিত।
তবে কোনো কোনো উদারপন্থী আলেম এ অভিমত দিয়েছেন যে বর্তমানে যেহেতু টয়লেট পরিচ্ছন্ন থাকে, তাই যখন কমোডের বাইরে অবস্থান করবে, তখন দোয়া বা বিসমিল্লাহ পড়া যাবে।
কিন্তু আমরা মনে করি, অজু টয়লেটের বাইরে বেসিন বা অন্য কোথাও করার চেষ্টা করবে। অথবা বাথরুমের ভেতরের কমোড ও বেসিনের মাঝখানে একটি পর্দা ঝুলিয়ে আলাদা করে নেবে। তখন টয়লেটের বেসিনে অজু করলে দোয়া পাঠ করা যাবে।
স্মরণ রাখতে হবে, মুসলমানদের সংস্কৃতি অন্যদের চেয়ে ভিন্ন হওয়া উচিত। তাই ঘরে বা ফ্ল্যাটে টয়লেট ও অজুখানা পৃথক হওয়া উচিত। আর সম্প্রতি পশ্চিমা বিশ্ব অ্যাটাস্ট বাথরুমের সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসছে।
টয়লেটে দোয়া পাঠ সম্পর্কে সৌদি আরবের স্থায়ী ফতোয়া কমিটির বক্তব্য হলো, ‘ইসলামের শিষ্টাচার হলো, মানুষ যখন টয়লেট বা গোসলখানায় প্রবেশ করবে তখন তাদের প্রতিপালককে স্মরণ করবে এভাবে যে প্রবেশের আগে বলবে,
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযুবিকা মিনাল খুবুসি ওয়াল খাবাইস। ’
অর্থ : হে আল্লাহ, তোমার কাছে নাপাক নর-নারী জিন-শয়তান থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করি। ’ (বুখারি ও মুসলিম)
টয়লেটে প্রবেশ করার পর মুখে জিকির পাঠ করবে না, বরং প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে জিকির পাঠ করা বাদ দিয়ে নীরবতা অবলম্বন করবে। (ফাতাওয়া লাজনা দায়েমা : ৫/৯৩)
মহান আল্লাহ আমাদের আমল করার তাওফিক দান করুন।