প্রতিটি ইবাদতেই রয়েছে পবিত্রতার গুরুত্ব

ঈমানের বিষয়ে মজবুতি থাকলে মানুষের ইহ ও পরকালীন জীবনের সর্বস্তরে সুখ, শান্তি, মুক্তির ক্ষেত্রে অল্প আমল ও ইবাদতই যথেষ্ট। এ কারণে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর উম্মতের জন্য কুরআনের আলোকে সাজিয়েছেন হাদিসের বিশাল ভাণ্ডার। যা কুরআনের অনুকপি।
ধরা যাক পবিত্রতা অর্জনের বিষয়টি। প্রতিটি ইবাদতেই রয়েছে পবিত্রতা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব। ফরজ ইবাদত পালনে পবিত্রতা অর্জন করাও ফরজ। আল্লাহ তাআলা বলেন-
‘হে ঈমানদারগণ! যখন তোমরা নামাজের জন্য দাঁড়াও; তখন তোমাদের মুখমণ্ডল, উভয় হাত কনুইসহ ধুয়ে নাও এবং তোমাদের মাথা মাসেহ কর এবং তোমাদের উভয় পা টাখনুসহ ধুয়ে নাও।’
কুরআনুল কারিমের এ নির্দেশ মুসলিম উম্মাহর জন্য অজুতে ৪ ফরজ হিসেবে সাব্যস্ত হয়েছে। আর ইবাদতের জন্য অজু করা ফরজ হয়েছে। আর সঠিকভাবে অজু করাও ইবাদত। অজুতে ৪টি ফরজ ছাড়াও রয়েছে সুন্নাত এবং মোস্তাহাব কাজ।
ইবাদতের ক্ষেত্রে অজুতে আল্লাহর নির্দেশিত এ ৪ কাজ না করলে অজু হবে না।যদি কারো অজু না হয় তবে তার ফরজ ইবাদতও আদায় হবে না।
আর সে কারণে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাবধানতার সঙ্গে ধারাবাহিকতা রক্ষা করে অজুর করার ঘোষণা যেমন দিয়েছেন তেমনি অজুর ফজিলতও ঘোষণা করেছেন।
অজুর ফজিলত অর্জনের মাধ্যমে মানুষ লাভ করবে ইহ ও পরকালীন জীবনের অনেক উপকারিতা। যা বর্ণনা করেছেন স্বয়ং প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
>> হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি পূর্ণাঙ্গভাবে অজু করবে; অতঃপর (কালিমা শাহাদাত) ‘আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু; ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু।’ বলবে; তার জন্য জান্নাতের ৮টি দরজা খুলে দেয়া হবে। যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা, সে তাতে প্রবেশ করতে পারবে। (মুসলিম, তিরমিজি)
>> অন্য হাদিসে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, (মুসলিম বা মুমিন) বান্দা ওজু করার সময় যখন মুখমণ্ডল ধৌত করে তখন (অজুর) পানির সঙ্গে ঐ সব গোনাহ বের হয়ে যায়, যা সে দু’চোখ দ্বারা করেছিল।
যখন সে দুই হাত ধৌত করে তখন হাত দ্বারা করা গোনাহ পানির সঙ্গে বের হয়ে যায়।
যখন সে দু’পা ধৌত করে তখন পা দ্বারা সংঘটিত গোনাহ পানির সঙ্গে বের হয়ে যায়। আর এভাবেই সে গুনাহ থেকে পরিত্রাণ লাভ করে। (মুসলিম)
>> কেয়ামতের ময়দানে (অসংখ্য মানুষের মধ্য থেকে) মুমিন বান্দাকে চিনার একমাত্র উপায়ও হলো এই অজু। যারা দুনিয়াতে (আল্লাহর ইবাদত পালনে) অজু করবে কেয়ামাতের দিন তাদের অঙ্গগুলো অজুর কারণে নূরের আলোয় ঝলমল করতে থাকবে। যা দেখে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর উম্মতকে খুঁজে বের করে নিবেন।
>> প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেন, ‘কোনো মুসলিম যখন উত্তমরূপে অজু করার পর তাঁর চেহারা ও মন উভয়টি আল্লাহ তাআলার অভিমুখী করে (নামাজে) দাঁড়ায় এবং দু’রাকাআত নামাজ আদায় করে; তখন তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায়। (মুসলিম)।

Post a Comment

Please Select Embedded Mode To Show The Comment System.*

Previous Post Next Post