মুসলমানদের অবশ্য পালনীয় কাজগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে প্রতিদিন পাঁচবার নামাজ আদায় করা। আর এই নামাজ আদায়ের অন্যতম পূর্বশর্ত কিবলামুখী হয়ে দাঁড়ানো। আমরা ছোট থেকেই পশ্চিম দিকে মুখ করে নামাজ পড়ায় অভ্যস্ত হবার কারণে এবং কিবলা নিয়ে বিস্তারিত না জানার কারণে বিভিন্ন দেশে বা অপরিচিত জায়গায় গেলে অনেক সময় বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। মাঝে মাঝে নানা প্রশ্নও জাগে বিষয়টি নিয়ে। কিবলা আসলে কি এটা কি কোনো নির্দিষ্ট দিক নাক অন্য কিছু এ নিয়ে প্রশ্নের কোনো শেষ নেই।
সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে আগে প্রশ্নটাকে বুঝতে হবে। তারপর সমাধান পাওয়াটাও সহজ হবে। অনেক ধর্মেই উপাসনার জন্য কোনো নির্দিষ্ট দিক থাকে। আসলে কিবলা হচ্ছে, নামাজের জন্য মুসলমানদের যেদিক মুখ করে দাঁড়াতে হয়, সেইদিকটি। মুসলমানদের জন্য কিবলা হচ্ছে মক্কায় অবস্থিত মসজিদুল হারাম, যা কাবা শরিফ নামে সবার কাছে পরিচিত। কিন্তু মজার বিষয় প্রথমে কাবা শরিফ কিবলা ছিল না। প্রথম কিবলা ছিল জেরুজালেমে অবস্থিত মসজিদুল আকসা। মদীনায় হিজরতের ষোল মাস পর কুরআনের নির্দেশনা অনুযায়ী কিবলা পরিবর্তিত হয়ে বর্তমানের কিবলা অর্থাৎ কাবা শরীফ কিবলা হিসেবে নির্ধারিত হয়।
সুরা বাকারার ১৪৪ নং আয়াত থেকেই এটি পরিষ্কার যে, কিবলা হচ্ছে সেদিকে যেদিকে রয়েছে মসজিদে হারাম অর্থাৎ কাবা। আমরা কিবলা বলতে পশ্চিম দিক বুঝে থাকি আসলে কিবলা বলতে পশ্চিম দিক নয়। তাই মনে রাখা দরকার কিবলা আসলে পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর বা দক্ষিণ যে কোনো দিক হতে পারে। কেননা বাংলাদেশ হতে কাবা পশ্চিম দিকে তাই আমরা কিবলা না বলে পশ্চিম বলে থাকি। যদি এটা উত্তর দিকে হত তাহলে উত্তর দিকই আমাদের কিবলা হত।
সুতরাং কিবলা হল সেই দিক যেখান থেকে কাবা শরীফ যেই দিক। কাবা শরীফ যেদিক হবে কিবলাও সেদিক হবে।